ভালুকা (ময়মনসিংহ) :
ভালুকা উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্পের ব্যারাকের ঘর নির্মাণের দুই যুগ অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত সংস্কার বা পুনঃনির্মান না হওয়ায় ঘরগুলোর বেহালদশা চরম আকার ধারন করেছে। ইতিমধ্যে ব্যারাকের সবগুলো ঘরের টিনের চালা ও বেড়া ভেঙ্গে কাঠ কাবারি নষ্ট হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই ঘরগুলোতে হাটু পানি জমে যায়। বর্তমানে আশ্রয়ণ প্রকল্পে
বসবাসরত বাসিন্দারা মানবেতর জীবন যাপন করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমুল অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পূনর্বাসনে ১৯৯৮ ও ১৯৯৯ সালে উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের হাতিবেড়, বনগাঁও ও ধলিকুড়ি মৌজায় ৪২.৩৭ একর জমির উপর ২২ টি ব্যারাকে ২২০ টি ঘর নির্মান করা হয়। সরকারি অফিসের ২০১৮ সালের হিসাব অনুযায়ী, ৩টি আশ্রয়ন প্রকল্পে ব্যারাক ২২টি, ঘর ২২০টি, খালি ৭৬ টি, জরাজীর্ণ
১৫৫টি। ২২ টি নলকূপের মধ্যে ১০ টি সচল। ১১০ টি টয়লেটের ১০৩ টিই অচল, ব্যবহারোপযোগী রয়েছে মাত্র ৭টি।
সরজমিনে উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের আশ্রয়ণ প্রকল্পটির কয়েকটি ব্যারাক ঘুরে দেখা যায়, ঘরগুলোর অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ। বসবাসরত বাসিন্দার অনেকেই খেয়ে না খেয়ে কোনো রকমে বেচেঁ আছে। অনেকেই চলে গিয়েছেন অন্যত্র। কেউ কেউ আবার ঋণের টাকা নিয়ে পালিয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে তারা আশ্রয়ন প্রকল্পের তেমন কোনো তথ্য দিতে পারেন নি।
হাতিবেড় আশ্রয়ণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি জসিম উদ্দিন জানান, ব্যারাকের ঘরগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। নির্মানের পর এ যাবত ব্যারাকগুলোতে কোনো সংস্কার করা হয়নি। প্রকল্পের নলকূপ এবং টয়লেট সবকয়টি বর্তমানে অকেজো। দিন দিন বেদখল হয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের জমি।
ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, আশ্রয়ণ প্রকল্পের জরাজীর্ণ ব্যারাকগুলো সংস্কারের জন্য তিনি একাধিক বার উপজেলা পরিষদ সমন্বয় কমিটির সভায় কথা বলেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নায়েমা তাবাচ্ছুম শাহ জানান, তার অফিসে আশ্রয়ণ প্রকল্পের তেমন কোনো তথ্য নেই। বরাদ্দ পাওয়া গেলে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলীনূর খান জানান, তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পটি পরিদর্শন করে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনার চেষ্টা করবেন।