স্টাফ রিপোর্টার:
মাদক একপ্রকার বিষ । এটা যেমনি ধ্বংস করে যুবসমাজকে তেমনি ধ্বংস করে সামাজিক কাঠামোকে । গরিব অসহায় লোকদের ব্যবহার করে পাচার করা হয় এই মাদক । অনেকে মাদক বিক্রি করে বড়লোক হওয়ার লোভে ধ্বংস করে দিচ্ছে তার পরিবার ও সমাজকে । মাদকে জড়িত হওয়া যতটা সহজ বের হওয়া ততটাই কঠিন ।
মানিকগঞ্জ পৌর অঞ্চলের ৭ নং ওয়ার্ডের মোঃ সোহেল হোসেন (৩৫) দীর্ঘদিন মাদকের সাথে জড়িত ছিল । সাংসারিক ও প্রশাসনিক চাপে মাদক থেকে সম্পূর্ণরূপে ফিরে আসলেও বাধা প্রদান করছে এলাকার মাদক ও সন্ত্রাসী চক্র । মাদক না পেয়ে মারধরও চাঁদা উত্তোলন করছে স্থানীয় এ চক্রটি । এমন অভিযোগ তুলে ধরে তার স্ত্রী তানিয়া আক্তার । মানিকগঞ্জ সদর থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ পেশ করা হয় ।
২৩ শে জুন ২০২৪ ইং সরজমিন থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, মামলার বাদী মোঃ সোহেল মিয়া বলেন,”গত একুশে জুন ২০২৪ ইং রাত আনুমানিক ১:৩০ ঘটিকায় আমার বাসা থেকে জোরপূর্ব ধরে এনে স্থানীয় বান্দুটিয়ার সুইজগেট এলাকায় আমিন পীর সাহেবের বাসার সামনে স্থানীয় কুখ্যাত সন্ত্রাসী দল ১/মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে হৃদয় (৩০) ২/মোকসেদ আলীর ছেলেদ্বয় সাব্বির (২২) ৩/রাব্বি (৩৫) ৪/হাতেম ভুইয়ার ছেলে জুয়েল (৩৬) আমার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে বাইরে এনে চাঁদা দাবি করে এবং মাদকের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করে । ‘আমি এ সকল কাজ ছেড়ে দিয়েছি’ ওদেরকে বারবার বললেও ওরা আমাকে উল্টাপাল্টা মারধোর শুরু করে । অসহ্য যন্ত্রণায় চিৎকার করতে চাইলেও ওরা মুখ আটকে ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় এবং ঘর থেকে ৫১হাজার টাকা লুটে নেয় এবং আমার স্ত্রীর সাথে থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও আমার হাতে থাকা ৬আনা ওজনের স্বর্ণের দুটি আংটি যেসবের বাজার মূল্য ১ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা কৌশলে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায় । আমি চিৎকার করতে চাইলে ওরা আমার মাথা বরাবর ইট মারে, যা আমার ডান কাঁধে লেগে থেতলে যায় । ধুমধাম শব্দে আশেপাশের লোক ছুটে আসলে ওরা আমাকে হুমকি দিয়ে চলে যায় । থানায় অভিযোগ করলে ওরা নাকি আমাকে খুন করে ফেলবে । আশেপাশের লোকদের সহায়তায় আমার স্ত্রী আমাকে মানিকগঞ্জ সদরের ২৫০শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হসপিটালে ভর্তি করে । স্থানীয় লোকদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় আমি থানায় অভিযোগ দাখিল করি । কিন্তু থানা থেকে এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি । আমাকে বাড়িতে না পেয়ে উল্টো বাড়ির লোকদের হুমকি দিয়ে চলে যায় ।”
স্ত্রী তানিয়া আক্তার বলেন,” ওদের সাথে মাদকে জড়িত থাকায় আমার স্বামী অনেকগুলো মামলা খেয়েছে । কিন্তু এখন আমাদের বাচ্চা আছে, আমাদের সংসার আছে । এ সব বিবেচনা করে ঐ সব ছেড়ে দীর্ঘদিন ধরে ভালো পথে চলছে । এখন আমার স্বামী অটো ও ট্রাক গাড়ি চালায় । কিন্তু ওরা আবারও আমার স্বামীকে নানা প্রকার চাপ ও চাঁদার মুখে ফেলছে । আমার বাড়ি থেকে টাকা পয়সা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে । আমি সরকারের নিকট এর কঠিন বিচার চাই ।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, এ সন্ত্রাস বাহিনীর মূল হোতা হৃদয় হোসেন মূলত মার্ডার কেসের একজন আসামি । এলাকায় দাপট দেখিয়ে বড় গলায় বলে যে, মানুষ খুন করা আমার কাছে কোন ব্যাপার না । এই ভয়ে অনেকেই ওদের সামনে আসতে সাহস পায় না । এখানে স্থানীয় লোকদের সামনে এমন দাপট দেখালে যারা ভাড়াটিয়া থাকে তাদের তো কথাই নেই । আমরা চাই, অতি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে ওর কঠিন বিচার হোক ।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনসার্চ মোঃ হাবিল হোসেনকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।