সরকারি ঔষুধ বিক্রি হচ্ছে হাসপাতালের সামনের ফার্মেসিতে

ছামিউল আলম :

 

সরকারি সিলযুক্ত ঔষধ বিক্রি হচ্ছে হাসপাতালের সামনের ফার্মেসীতে। এই ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলায়। অভিযোগ আছে ওষুধ প্রশাসনের কোন তদারকি নেই ফার্মেসী গুলোতে। সিভিল সার্জন বলছেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার রুনিগাও গ্রামের মোঃ রফিকুল ইসলাম (৪২), দনাকুর্শা গ্রামের গাজি মিয়া, হাসনখিলা গ্রামের মোঃ রাজন আহামেদ (২০), চন্দ্রকোনা বাছুর আগলা গ্রামের রিপু মনি (১৭) তারা সবাই সরকারি হাসপাতালে ডাইরিয়া জনিত কারনে ভর্তি হন, মহিলা ওয়াডে একজন এবং পুরুষ ওয়াডে তিন জন। চার জনেরই স্বজনদের অভিযোগ, ডাইরিয়া সমস্যা জনিত কারনে দুইদিনে আগে নকলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তারা।

কিন্তু নকলা সরকারি হাসপাতালে ডাইরিয়া রোগের ভিসারালজিন ইনজেকশন ছাড়া ডাইরিয়ার আইভি স্যালাইন, বমির ইনজেকশন এবং মেট্রোনিডাজল ইনজেকশন সহ সব ধরনের আইভি ইনজেকশন হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই কিনতে হয়েছে হাসপাতালের সামনে ঔষধের দোকান থেকে। এর মধ্যে এসেন্সিয়াল ড্রাগ কোম্পানির মেট্রোনিডাজন ইনজেকশনও কিনেছে হাসপাতালের সামনের দোকান থেকেই, যাতে লেখা ছিল সরকারি ঔষধ বিক্রয় করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। অভিযোগ আছে, এসব দোকানের কয়েকজন অসাধু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন যাবত সরকারি ঔষধ বিক্রয় করে আসছিল। ঔষধ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেয়নি সেইসব ফার্মেসি গুলোর বিরুদ্ধে। ১৪ অক্টোবর সোমবার দুপুরে হাসপাতালে গেলে পাওয়া যায় এমন তথ্য।

রোগীর স্বজনরা বলেন, আমরা বন্যাকবলিত ছিলাম। পানি কমার সাথে সাথেই আমাদের শিশু এবং বয়স্করা ডাইরিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত দুইদিন আগে নকলা হাসপাতালে আমাদের রোগীদের ডায়রিয়া সমস্যার কারণে ভর্তি করেছি। কিন্তু হাসপাতালে দু একটি ওষুধ ছাড়া কোন ওষুধ আমরা পাচ্ছি না। সমস্ত ঔষধ বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। আবার সেই ওষুধের গায়ে লেখা এটা সরকারি সম্পদ ক্রয় বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ। সরকারি ঔষধ সরকারি হাসপাতালে পাওয়া যাচ্ছে না, কিন্তু দোকানে ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে। আমরা আজকেও হাসপাতালের সামনের ফার্মেসি থেকে এই ওষুধগুলো কিনে এনেছি।

নকলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, আমাদের নকলা হাসপাতাল থেকে ঔষধ বাইরে চলে গেছে এটা আগেই বলা যাবে না। সরকারি ঔষধ বাইরে বিক্রির কোন সুযোগ নেই আমাদের হাসপাতালের কোন কর্মকর্তা যদি জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধে বা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেরপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা: জসিম উদ্দিন দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকারি ঔষদ বিক্রি এটা গুরুতর অপরাধ। যে ফার্মেসি গুলো সরকারি ওষুধ বিক্রি করছে বা আমাদের কোন কর্মকর্তা যদি ঔষধ বিক্রির সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। ঔষধ বিক্রির সাথে আমাদের কোন কর্মকর্তা যদি জড়িত থাকে তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেরপুর ঔষধ প্রশাসনের সহকারী পরিচালক গৌরি রানী বসাক বলেন, সরকারি ওষুধ ফার্মেসিতে বিক্রি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি শেরপুর জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করব এবং যে সমস্ত ফার্মেসিতে সরকারের ঔষধ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *