মানবসেবার নামে অপকর্ম ও অর্থ লোপাট (পর্ব—১)

মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত ‘মেহেরুন্নেসা বৃদ্ধাশ্রম’ এর প্রতিষ্ঠাতা আপেল মাহমুদ ওরফে ময়েন এর বিরুদ্ধে সম্প্রতি ভয়ংকর প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। অসহায়—দুস্থ মানুষের সেবার কথা বলে গড়ে তোলা বৃদ্ধাশ্রম ঘিরে তার অপকর্মের ফিরিস্তি এখন মানুষের মুখে মুখে। বিভিন্ন অপকর্মের মধ্যে অনুদানের টাকায় নিজের নামে সম্পদ ক্রয়, আশ্রমের বৃদ্ধাদের নির্যাতন, অসহায় মানুষের নামে সংগৃহীত অর্থ আত্মসাৎ অন্যতম।

আপেল মাহমুদ ওরফে ময়েন তার বৃদ্ধাশ্রমে আশ্রিত নারী, পুরুষ ও শিশুদের অসহায়ত্ব তুলে ধরে ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চাইতেন। প্রতিমাসে মোটা অঙ্কের অনুদানও মিলত। অথচ এই আশ্রম ঘিরেই ভয়াবহ প্রতারণার জাল বোনেন তিনি। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ফুলবাড়ি ইউনিয়নের সোহাগী গ্রামে নিজ এলাকায় জালিয়াতি করে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এত অপকর্মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও আপেল মাহমুদ বিভিন্ন মাধ্যমে নিজেকে ভালো মানুষ হিসাবে প্রচারের চেষ্টা করলে ক্রমেই রহস্যের জট ঘনীভূত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, আপেল মাহমুদ ওরফে ময়েন বিগত কয়েকবছর আগে ছিলেন জ্বীনের বাদশা। যিনি জ্বীন সেজে বয়ানের মাধ্যমে মানুষের কাছে অর্থ হাতিয়ে নিতেন। একসময় দুবেলা—দুমুঠো খাবার জোটাতে মানুষের বাসায় কাজ করতো এই প্রতারক ময়েন। এবং তার বাবা রাস্তায় রাস্তায় জারি গান গেয়ে সংসার চালাতেন। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার পর ভাগ্যের চাকা ঘুরে যেতে থাকে এই ময়েনের। এক সময় গান গেয়ে সংসার চালানো ময়েনের বাবা ও ময়েন এই সময়ের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও নামে বেনামে বিপুল সম্পদের মালিক।

এসব সম্পদ সে কিভাবে অর্জন করলো সেই প্রশ্ন ঘুমিয়ে নয় জাগ্রতই রয়ে যায়।

প্রশ্ন— ১: আপেল মাহমুদ কোন প্রেক্ষাপটে এই বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠা করেছিলো?
প্রশ্ন— ২: নিজের মনগড়াভাবে বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনা কমিটি গঠন কেন করলো?
প্রশ্ন— ৩: ময়েনের ইনকাম সোর্স কি?

বৃদ্ধাশ্রমে বৃদ্ধরা থাকবে, সেবা নিবে এটা নি:সন্দেহে একটা ভালো কাজ। কিন্তু এই ভালো কাজকে পুজি করে কেউ যদি নিজের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে তাহলে কি সেটাকে মানবসেবা বলা যায়?

দ্রুত এই আপেলকে আইনের আওতায় এনে বৃদ্ধাশ্রমে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে এনে সমাজে সৎ মানুষদের মাধ্যমে পরিচালনা করা হোক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *