রাজউকে ঘুষ বাণিজ্যই যেন জয়নালের প্রধান টার্গেট

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:

 

মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে রাজউকের অনুমোদনবিহীন ভবনের নির্মানের সুযোগ করে দিয়েছে খোদ রাজউকেরই কর্মকর্তা ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন। অনুমোদনবিহীন ভবনটি নির্মানের শুরুতেই রাজউকের কাছে অভিযোগ দায়ের করে পাশের জমির এক মালিক। কিন্তু অভিযোগের সুত্র ধরে ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন নির্মানাধীন ভবনের পরিদর্শন করেন। তবে কার্যত তিনি রাজউক আইন অনুযায়ী কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন না। এতে ভবনটির নির্মান কাজ বর্তমানে ৪র্থ তলায় চলমান রয়েছে।

রাজউকের কর্মকর্তা—কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নকশা বহির্ভূত বিভিন্ন ভবন নির্মাণে ঘুষ বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অনিয়মের অভিযোগে বেশ পুরানো। এসব অভিযোগের সত্যতা টিআইবি, দুদক সহ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। রাজউকের অনুমোদনবিহীন ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণে সহযোগিতা করে রাজউকের অসৎ কর্মকর্তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ কারণে ঢাকার কিছু এলাকা অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়া নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ভবনের ছাড়পত্র ও নকশা পাইয়ে দিয়েও তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। নকশা পাইয়ে দিতে ঘুষ, নকশার অনুমোদন না থাকলে ঘুষ, নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মান না করলেও বাড়ীওয়ালার ঘুষ দিতে হয় ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনকে।

দীর্ঘদিন ধরে খিলগাঁও, বাসাবো, মাদারটেক, যাত্রাবাড়ী, আরকে মিশন রোডের আশপাশসহ আরও বেশ কয়েকটি এলাকার দায়িত্ব পালন করেছেন ইমরান। সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী— একই জায়গায় তিন বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের বিধান না থাকলেও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তাকে ৬ বছরের বেশি সময় একই পদে রাখা হয়েছে।

রাজউক জোন—৭/৩ এর অধীনে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ হাসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা ওয়াহিদুজ্জামান তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, তার মামা ফজলুল হক সুদন ও চাচাতো ভাই মাসুম মিয়া সিন্ডিকেট গড়ে তার বাবা—মায়ের ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত জমি জোড়পূর্বক দখল করে উক্ত জমির দুটি অংশে ৫তলা করে ২টি, একটি অংশে ৩ তলা ১টি বাড়ি নির্মান করে অপর অংশে ১০ তলা বিশিষ্ট ১টি বাড়ীর নির্মানে ফাউন্ডেশনের কাজ চলমান রেখেছে। ভবনগুলো রাজউকের অনুমোদিত প্ল্যান ছাড়া ইমারত নির্মান আইন লঙ্গণ করে নির্মান করা হচ্ছে। ভবনের চারপাশের সেটব্যাক বা ডেভিয়েশন ঠিক নেই। অর্থাৎ রাজউকের ইমারত নির্মান আইন অনুযায়ী দুটি বাড়ির মাঝে ও চারপাশে যে জায়গা খালি রাখার বিধান রয়েছে তাহার কোন কিছুই মানা হয়নি এবং নির্মানকালীন নিরাপত্তা বেষ্টনী ব্যবহার করা হচ্ছে না। যেকোন সময় ভয়ংকর দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ঢালাই মেশিনের বিকট শব্দে ছোট বাচ্চা নিয়ে ঘরে থাকা যায় না। তার বসবাসের ঘরটিকে চারিদিক থেকে এমনভাবে ঘিরে ফেলেছে, এখন ঘরবাড়ী ছেড়ে রোহিঙ্গাদের মতো পালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। আমার ঘর থেকে বাইরে বের হওয়ার রাস্তাটি বিতগত ১০/১২ বছর যাবৎ বন্ধ করে রেখেছে, দুটি ভবনের মাঝে মাত্র আধা ফুট জায়গা দিয়ে তিনি তার পরিবাব নিয়ে অনেক কষ্ঠে চলাচল করেন। এতে তার পরিবার নিয়ে চরমভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

কেউ স্ব—চোখে না দেখলে বুঝতে পারবে না। সুতরাং এরুপ ভুমিদস্যু, মানবাধিকার ও রাউজক আইন কানুন লঙ্গণকারীর অপকর্মের বিরুদ্ধে সরেজমিনে পরিদর্শন পূর্বক রাজউক আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবী জানানো হয়।

কিন্তু উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিন সরেজমিনে পরিদর্শন গিয়ে বাড়ীওয়ালা সুদনের নিকট থেকে মোটা অংকের ঘুষ গ্রহন করে অভিযোগটি অন্ধকারে ফেলে রাখেন। ব্যবস্থা নিবো নিচ্ছি করতেই ৬/৭ মাস কেটে গেছে। আর সুদনের বাড়ীও ৪তালা উঠে গেছে।

এব্যাপারে ইমারত পরিদর্শক জয়নাল আবেদিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিভিন্ন টালবাহানার কথা উল্লেখ করে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *