সাতক্ষীরায় পানিফল চাষে স্বচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

আব্দুর রশিদ : 

সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় পানিফল চাষে ফিরেছে সুদিন। এই মৌসুমি ফল, যা স্থানীয়ভাবে ‘পানি সিঙ্গারা’ নামে পরিচিত, চাষ করে এলাকার দুই শতাধিক কৃষক কিছুটা হলেও পরিবারের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন। জলাবদ্ধ পতিত জমিতে এখন পানিফলের গাছের শোভা ফুটে উঠেছে। প্রতিদিন ভোরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পানিফল বস্তায় ভরে যাত্রীবাহী বাস, ভ্যানগাড়ি, ইজিবাইকের মাধ্যমে জেলা সদর, যশোর, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাকযোগে পাঠানো হচ্ছে ঢাকাসহ চট্টগ্রামে।

এ ছাড়া কলারোয়া পৌরসদরের মুরারীকাটি থেকে যুগিবাড়ী পর্যন্ত যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে পানিফল বিক্রি করছে স্থানীয় কৃষকরা। কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশ শেখর দাস জানান, “পানিফল একটি বর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। চলতি বছর প্রায় ৩৮ হেক্টর পতিত জমিতে পানিফল চাষ হয়েছে।

পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় এ ফলের চাহিদা বেশ। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় উপজেলায় এই ফলের চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। প্রতি বছর বোরো ধান কাটার পর জলাবদ্ধ পতিত জমিতে এবং পানি জমে থাকা ডোবা ও খাল-বিলে এই ফলের লতা রোপণ করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “তিন থেকে সাড়ে তিন মাসের মধ্যে গাছে ফল আসে, এবং চাষে সার-কীটনাশকের তেমন প্রয়োজন হয় না।”

পানিফল চাষি তৌহিদুল ইসলাম, ওসমান গনি, আবুল হোসেন, আব্দুল কাদের ও কবিরুল ইসলাম জানান, সরকারি ও বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সহায়তা পেলে আরও প্রান্তিক কৃষক এই ফলের চাষে আগ্রহী হবেন। এতে তারা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারবেন, তেমনি গ্রামীণ অর্থনীতিতে অবদান রাখাও সম্ভব হবে।

কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শুভ্রাংশ শেখর দাস আরও বলেন, “পানিফল চাষ বর্তমানে নতুন সম্ভাবনা হিসেবে দেখা দিয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগ সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে এর বিস্তার ঘটাতে। যেকোনো পতিত পুকুর, ডোবা কিংবা জলাশয়ে এটি চাষ করা সম্ভব এবং উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী বছর পানিফল চাষের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *