কুমিল্ল, দাউদকান্দির সাংবাদিক সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা

মো: মাহবুব আলম :

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে হত্যা মামলার চেষ্টা ও ধর্ষণ চেষ্টায় মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সাংবাদিক সালমা আক্তার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন সালমার দায়েরকৃত মামলার আসামী শাহানাজ আক্তার সুমনা। হত্যা চেষ্টা ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা ঘটাবার দেড় মাস পর মামলার বাদী সালমা আক্তারসহ পরিবারের লোকজনের নামে দাউদকান্দি থানায় মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা করা হয়। হত্যা চেষ্টা ও ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে ভিক্টিমকে উদ্ধার করেন। ঘটনাটি ঘটেছে দাউদকান্দি উপজেলার ঈদগাঁহ বিশ্বরোড, আক্তার ফার্ণিচারের সামনের রাস্তার উত্তর পার্শে¦র নির্জণ জায়গায়।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক সালমা আক্তার গত ৫ই আগস্ট দাউদকান্দি উপজেলার বিশ্বরোডে ও ভাড়াটে জাকির হোসেনের ছেলে ও আওয়ামী লীগ করা নুরপুর হক কমিশনারের নাতি সামি অস্ত্র উঠিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার উপর গুলি চালানোর সময় ছবি তুলেন ও ১৬ মিনিটের ভিডিও ফুটেজ মোবাইলে ধারন করেন সালমা আক্তার সাংবাদিক । এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাকির হোসেনের স্ত্রী ও নুরপুর হক কমিশনারের মেয়ে সুমনা আক্তার তার বাহিনী নিয়ে ৩ বার তার বাসায় ভাঙচুর সহ হামলা চালায় । এ ঘটনায় গত ২২-০৮-২০২৪ কুমিল্লা আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়, মামলা নং- ৩৭/২৪। মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে আছেন দাউদকান্দি মডেল থানার এস আই হাবিবুর রহমানের নিকট ।

পরবর্তীতেও দুইবার তার উপর রাস্তায় হামলা চালায় ও অপহরণের চেষ্টা চালিয়ে তার নিকট থেকে বাড়ির জন্য রড কেনার নগদ ৯০ হাজার টাকা, একটি স্মার্ট ফোন ও ব্যানিটি ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ ব্যাপারেও দাউদকান্দি মডেল থানায় ভিকটিম (সালমা) বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে গত ১১-১০-২৪ইং তারিখে মামলা দায়ের করে, মামলা নং- ২৭০/২৪। এ ব্যাপারে সালমা আক্তার দাউদকান্দি থানার সামনে শহীদ রিফাত শিশু পার্কে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সাংবাদিক সম্মেলনের প্রেস রিলিজটি কিছু জাতীয় পত্রিকা ও কুমিল্লার স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রেস রিলিজটি নজরে আসলে পরবর্তীতে পুলিশ ১৯/১০/২৪ইং তারিখ ১নং আসামী সুমনাকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে। মামলার বাকী আসামী আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে আসে। জামিনে বের হয়েই আসামী আবার সন্ত্রাসী কায়দায় সাংবাদিক সালমাকে দাউদকান্দি বলদা খাল থেকে অপহরণ করে গৌরিপুর রাবেয়া পাম্পের পাশে হাত,পা, মুখ, বেধে মারধরসহ ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।

এ সময় সাংবাদিক সালমা বিবস্ত্র অবস্থায় থাকলে স্থানীয় লোকজনের সহয়তায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে এবং থানায় না নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহয়তায় বাড়িতে পৌছে দেন।

পরবর্তীতে এই ঘটনার কোন ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনাকে নাটক বলে আখ্যায়িত করে দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ, অন্যান্য পুলিশ গন সাংবাদিক সালমাকে মামলা দেওয়ার হুমকি দেয় এবং তাৎক্ষনিক মহিলা পুলিশ দ্বারা গ্রেফতার করার চেষ্টা চালায় । পরে বাধ্য হয়ে সাংবাদিক সালমা আক্তার কুমিল্লা আদালতে গত ২১-১০-২৪ ইং তারিখে একটি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করে। মামলা নং সিপি-৪৫৫/২৪, ধারা- ৭/৯(৪)(খ)/১০/৩০ ধারা। পরবর্তীতে মামলার অভিযোগটি এফ.আই.আর হিসাবে গন্য করে আইন অনুযায়ী তদন্তপূর্বক ফৌজধারীর কার্যবিধির ১৭৩ ধারার রিপোর্ট দাখিল করার জন্য দাউদকাদি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের আদেশ অমান্য করে উল্টো সাংবাদিক সালমা আক্তারের দায়ের করা ৪টি মামলার ১নং আসামী শাহানাজ আক্তার সুমনাকে মামলার বাদী করে সাংবাদিক সালমা আক্তারকে ১নং আসামী, সালমার ভাই (সুফিয়ান) ২নং আসামী, ও বাবা (সালাম সরদার) কে ৩নং আসামী দিয়ে দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ মিথ্যে ৫ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলা এফআইআর করে দেন।

স্থানীয়ভাবে যেটাকে বলা হয় কাউন্টার মামলা।

দাউদকান্দি যুবদল থানার সভাপতি নূর মোহাম্মদ সেলিম, শাহাবুদ্দিন, কাউসার, কয়েকজন সাংবাদিকসহ বৈষ্যম্য বিরোধী ছাত্র আন্দলনের সমন্বয়করা , ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন বলেন, সাংবাদিক সালমা আক্তারের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি করার বিষটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

সালমা আক্তারের বক্তব্যে আরো জানা যায়- ১১-১০-২৪ ইং তারিখে সালমার উপর হামলা হওয়ার ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১নং আসামী শাহানাজ আক্তারকে গ্রেফতারসহ সালমাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে এবং দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদ নিজে সালমার নির্যাতনের অবস্থা দেখেন।

পরবর্তীতে ওসি জুনায়েদ মিথ্যে আশ্বাসে আসামীকে আটক রাখার কথা বলে সালমার নিকট থেকে একটি লিখিত অভিযোগে স্বাক্ষর রাখে। কিন্তু ওসি জুনায়েদ সেই দিন রাতেই ১১/১০/২৪ইং ১নং আসামী শাহানাজ আক্তারকে ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে সাংবাদিক সালমা ও তার ভাই (সুফিয়ান), শাহাবুদ্দিন, কাওছার, ও কয়েকজন সাংবাদিকের উপস্থিতিতে অভিযোগ লিখে ওসি জুনায়দের নিকট দেন। এই অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা হবে বলে জানায় ওসি।

কিন্তু সাংবাদিক সালমা রাত ৮ ঘটিকায় থানায় এসে দেখে তার দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা না নিয়ে ওসি জুনায়েদের টাইপকৃত এজহারের স্বাক্ষর স্ক্যানার করে ওসির নিজস্ব মতামতারে ভিত্তিতে মামলা রুজু করে আদালতে মামলা প্রেরণ করে। পরিশেষে সালমা আক্তার বলেন আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে চাঁদাবাজির মামলা নেওয়ায় সঠিক তদন্তে দাউদকান্দি থানার ওসি জুনায়েদের আইন অনুসারে ব্যবস্থার দাবি জানান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *