দুর্নীতিবাজ আইবিসি যে নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে

মোঃ মাহাবুব আলম  : 

বাংলাদেশের একজন সাধারন গার্মেন্টস শ্রমিক। দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর যাবত গার্মেন্টস সেক্টরে কাজ করিয়া আসিতেছি। চট্টগ্রাম-ঢাকা- গাজীপুর-সাভার-আশুলিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিতে কাজ করার সুবাদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফেডারেশনের নেতাদের সাথে পরিচয় হয়। বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের দাবিতে অন্যান্য শ্রমিকদের সাথে রাজপথে থেকেছি অনেকবার আমার সাথে থাকা শ্রমিক বোন- ভাইকে আহত হতে দেখেছি।

মালিকের অবহেলায় বা মালিকপক্ষের গুন্ডাদের হামলাতে এবং এমনকি পুলিশের গুলিতে জীবন দিতে দেখেছি শ্রমিক ভাই-বোনদের। সর্বশেষ ২০২৩ সনে নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা আদায়ের লক্ষে রাজপথে আন্দোলনরত অবস্থায় আমার বাংলাদেশের চারজন শ্রমিক ভাইবোন জীবন দিয়েছেন। ৪৩টি মামলা দায়ের করা হয় অজ্ঞাত ২০ হাজার শ্রমিকের নামে। গ্রেফতার করা হয় শতাধিক শ্রমিককে। মামলার বোঝা তাদের বইতে হবে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর।

এত কিছুর পরেও আমাদের নিম্নতম মজুরি ২৩ হাজার টাকার দাবি আদায়ের আন্দোলন ব্যর্থতায় রূপ নেয় আইবিসির পাঁচ নেতার রেডিসন কেলেঙ্কারির মাধ্যমে। বাংলাদেশের আইবিসির ৫ নেতা যারা পাঁচটি ফেডারেশনের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন বা আজও আছেন। এই পাঁচ নেতা শ্রমিকদের আন্দোলনে নামিয়ে দিয়ে ৬ ই নভেম্বর হোটেল রেডিসনে নিজেদের বিকিয়ে দিয়ে পরদিন প্রায় সকলেই বিদেশে চলে যায়।

প্রথমদিকে সাধারণ শ্রমিকরা কিছুই জানতোনা কিন্তু আস্তে আস্ত সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্নভাবে এখন বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের কাছে এদের পরিচয় খুবই স্পষ্ট।
পাঁচ নেতার পরিচয়-
১) আমিরুল হক আমিন, সভাপতি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
২) তৌহিদুর রহমান, সভাপতি, পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন।
৩) সালাহউদ্দিন স্বপন, সভাপতি, বাংলাদেশ বিপ্লবী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন।
৪) বাবুল আক্তার, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশন।
৫) রাশদুল আলম রাজু, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন। ৪ ও ৫ নং এর সভাপতি কল্পনা আক্তার ও চন্দন কুমার দে তাদের সেক্রেটারিদের সকল দুস্কর্মের সাথে যুক্ত থাকেন।

এই লোকগুলো বার বার বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রামের পথে নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাছিল করেন এবং শ্রমজীবী মানুষের ঐক্য বিনষ্ট করেন। ২০১০, ২০১৩, ২০১৮ তেও এই লোকগুলোই ২০২৩ এর মতো সুবিধা নিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। এমনকি আমার নিজের নেতৃতৃাধীন ইউনিয়নও এই গ্রুপের বিগফের এই নেতারাই বিক্রি করে দেয়। আমাদের লক্ষ- পরবর্তী মজুরী বৃদ্ধির আন্দোলনের সময় এই লোকগুলো যাতে শ্রমিকদের বিক্রি করতে না পারে সেজন্য গার্মেন্টস শ্রমিকদের সচেতন করা।

আপনাদেরসহ সকল আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠনের কাছে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিকদের পক্ষ থেকে অনুরোধ ভবিষ্যতে এসব দূর্নীতিবাজদের থেকে সতর্ক থাকুন এবং বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ গার্মেন্টস শ্রমিকদের সাথে
বিশ্বাসভঙ্গকারী নেতাদের সহযোগিতা বন্ধ করুন। গার্মেন্টস শ্রমিকদের সচেতন করার কাজে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *