নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর দুর্গাপুরের চুনিয়াপাড়া, গগনবাড়িয়া, সাকোয়া গ্রামের ১৩ কৃষক পেলেন ১৪ লাখ ২১ হাজার টাকা। তারা তাদের চাষকৃত ফুলকপি খেতে ব্লেসিং এগ্রোভেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নিউজিম কীটনাশক প্রয়োগে ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই অর্থ পেলেন। ক্ষতিপূরণের অর্থ পেয়ে খুশি কৃষকরা।
এর আগে, ব্লেসিং এগ্রোভেট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নিউজিম কীটনাশক ব্যবহারে ফসল ক্ষতিগ্রস্তের সংবাদ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। কৃষকদের কান্নাকাটি অসহায়ত্বের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়। সর্বস্বান্ত হয়ে কৃষকেরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন বারবার ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এর ফলশ্রুতিতে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তৎপরতায় কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিঘা প্রতি ১ লাখ টাকা হারে ১৩ জন কৃষকের মাঝে ১৪ লাখ ২১ হাজার ৭০ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয় কোম্পানির কাছে থেকে।
জানা যায়, গত ১০ নভেম্বর (বুধবার) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেন কোম্পানির প্রতিনিধিরা। সেই আলোচনার ভিত্তিতেই ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করা হয়। যা, ১১ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) উপজেলা মিনি কনফারেন্স রুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন, উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মোঃ ফরিদ হোসাইন এবং ব্লেসিং গ্রুপের হেড অব বিজনেস মোঃ আল আমিন, ব্লেসিং গ্রুপের ডিজিএম মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, ব্লেসিং গ্রুপের আরএসএম মোঃ জহুরুল হক ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকগণের উপস্থিতিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের হাতে কোম্পানির প্রতিনিধিরা আনুপাতিক হারে ভর্তুকি প্রদান করে তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতিও দেন। একই সাথে সারাদেশ থেকে এই প্রোডাক্ট উঠিয়ে নেন তারা।
উক্ত সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা শারমিন জানান, কৃষি হচ্ছে আমাদের প্রাণ, আমাদের শক্তি, আমাদের কৃষকরা না বাঁচলে আমরা বাজাবো না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে তিনি আরো জানান, আপনাদের কষ্ট আমি নিজের চোখে দেখেছি, আপনাদের চোখের পানি দেখেছি, কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তা দেখেছি। ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে আপনারা আবার কৃষিকাজে সফলতার সাথে ফিরবেন এই প্রত্যাশা করি।
এদিকে, ব্লেসিং গ্রুপের হেড অফ বিজনেস কৃষিবিদ মোঃ আল আমিন জানান, আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ডাকে সাড়া দিয়ে দুর্গাপুর এসেছি। কৃষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন আপনারা ভুক্তভোগী, আমরাও কখনো চাইনি আপনারা ক্ষতিগ্রস্ত হন বা আমাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা চাননি যারা আমাদের কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হোক। সকলের কাছেই আমরা আন্তরিক দুঃখিত এই পণ্যটি অতীতে ব্যবহার করেছেন ভাল ফলাফল পেয়েছেন। এটি একটি দুর্ঘটনা কোন কারণে হয়তো এমনটি ঘটেছে। এই লটের প্রোডাক্টগুলো আমরা স্টক করে ফেলেছি। পরীক্ষা—নিরীক্ষা করে কোন সমস্যা পেলে বাজারজাতও করবো না। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে আছি আপনারাও আমাদের পাশে দাঁড়াবেন ভবিষ্যতে আমরা আরো মানসম্মত পূর্ণ কৃষকের মাঝে দিব ইনশাআল্লাহ।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে শফিকুল ইসলাম জানান, আমি ১০০ শতাংশ জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলাম নিউজিম পাউডার দিয়ে আমার সব ফুলকপি পৌঁছে নষ্ট হয়ে যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতা ও কোম্পানির আন্তরিকতায় তিন লক্ষ তিন হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। যা দিয়ে আমি
বর্তমানে আলুর চাষাবাদ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।