হাসপাতালের শেয়ারের ২৬ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা,বিদেশ যেতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

ইমন হোসাইন;

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কুমারশীল মোড়ে অবস্থিত যমুনা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক অংশিদারের শেয়ার ও লভ্যাংশের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক পরিচালকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় হাসপাতালটির পরিচালক প্রশাসন জুলফিকার আলীকে আসামী করে গত ৩ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী আশরাফ মিয়া৷ আশরাফ মিয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরার গৌতম পাড়ার আব্দুল হোসেনের ছেলে। তিনিও ওই হাসপাতালের অংশিদার ও একজন পরিচালক। মামলা দায়ের পর জুলফিকার আলী বিদেশ চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে ১০ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে আবারও আদালতের দারস্থ হন বিবাদী আশরাফ মিয়া। এর প্রেক্ষিতে আদালত ৩১ অক্টোবর আসামী জুলফিকার আলীকে বিদেশ যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

মামলার নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে দুই কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ৩০ জন অংশিদার যমুনা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের যাত্রা শুরু করেন। হাসপাতালে কোন শেয়ারের মূল্য প্রথম দিকে কম থাকে, পরবর্তী অংশিদারগণের শেয়ার মূল্য বেশি ছিল। এরমধ্যে আশরাফ মিয়া একজন অংশিদার, তার শেয়ার মূল্য ছিল ৮ লাখ ১৫ হাজার টাকা। সকল অংশিদার ২৮টি শর্তে হাসপাতাল পরিচালনার জন্যে চুক্তি করেন। এর মূল কাগজ পরিচালক জুলফিকার আলীর কাছে রেখে সকল অংশিদারকে ফটোকপি প্রদান করেন। এরপর থেকে যমুনা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালনা হয়ে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ ২০১৯ সাল থেকে আশরাফ মিয়াকে হাসপাতাল থেকে লভ্যাংশ প্রদান করা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ৫ বছর যাবত হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা পরিচালক (প্রশাসন) জুলফিকার আলীর কাছে লভ্যাংশের ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা হন আশরাফ মিয়া। এই টাকা জুলফিকার আলীর কাছে চাইলে তিনি টালবাহানা করেন। পরে বাধ্য হয়ে মালিকানা সহ লভ্যাংশ পেতে গত ৩ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জুলফিকার আলীকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন আশরাফ মিয়ার মা স্বপ্না বেগম। এই মামলা দায়েরের পর জুলফিকার আলী বিদেশ চলে যাওয়া ও শেয়ার বিক্রি করার শঙ্কায় আশরাফ আলী সদর সিনিয়র জজ আদালতে গত ৩০ জুন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে আদালত মালিকানার অংশীদারিত্ব অন্যত্র হস্তান্তর ও বিদেশ যাওয়ার উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

বাদি পক্ষের আইনজীবী মো. মোবারক উল্লাহ এই বিষয়ে বলেন, বাদির আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর বিজ্ঞ আদালত এক আদেশ জারি করেন। আদেশে জুলফিকার আলী যেন কোন শেয়ার না বিক্রয় করতে পারেন এবং বিদেশ না যেতে পারেন এই বিষয়ে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি আরও বলেন, আসামী জুলফিকার আলী সঠিক মানুষ নয়। এর আগেও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারি সহ আরো নানান অভিযোগ শুনেছি। এখন তিনি আমার মক্কেলের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশ পালিয়ে যেতে চাইছে। তাই আমরা আদালতের কাছে জুলফিকারের বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা চেয়েছি এবং আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।

এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে যমুনা হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক (প্রশাসন) অভিযুক্ত জুলফিকার আলীর সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *