ঋণ প্রদানে ব্যাংকের জামিনদার আইন বাতিল ও জামিনদার মোস্তাক আহমেদের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: 
ঢাকাঃ ২৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ইস্টার্ন ব্যাংক লিঃ এর লোন গ্রহীতা নিখোঁজ হওয়ায় ৩নং জামিনদার মুহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও জামিনদারের প্রথা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী পরিচালক শেখ মোঃ তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হুমায়ুন কবির, মোঃ কবির হোসেন, মোকাম্মেল হোসেন চৌধুরি মেনন, মোঃ মহসীন শেখ, মতিউর রহমান সরদার, কাজী আবির আসলাম, আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য তাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইস্টার্ন ব্যাংকের লোন গ্রহীতা পারসা করপোরেশন যার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ১১৮১০৭০১১৮৬৮৯। কোভিড-১৯ এর পর ব্যবসায় দেউলিয়া হয়ে লোন গ্রহীতা নিখোঁজ হওয়ায়, ৩ নং জামিনদারকে মামলা ও গ্রেফতার করে  হয়রানি করায় ২০ লাখ টাকা জমা দিয়ে জামিনে ছিলেন। আটক করে জোরপূর্বক জামিনের জন্য শর্ত দেন যে, ২০ লক্ষ টাকা দেওয়ার পর ৯০ দিনের মধ্যে বাকি পুরো টাকা পরিশোধ করতে হবে। তিনি নিরুপায় হয়ে শর্ত মেনে নেন। ৯০ দিনের মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আবারও ওয়ারেন্ট দিয়ে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে, যা অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। ৩নং জামিনদার মুহাম্মদ মোস্তাক আহমেদ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়ে বার বার সময় চেয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর-৩ এর বরাবরে আবেদনও করেছেন। যেহেতু উনি জামিনদার এবং আদালতে লিখিতভাবে টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেছেন। লোন পরিশোধের জন্য ইস্টার্ন ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা চলতেছিল, কিন্তু আলোচনা অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এটা মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল।

বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটি মনে করে পারসা কর্পোরেশনকে ব্যাংক কর্মকর্তারা আর্থিক সুবিধা নিয়ে কোন ধরণের জামানত ব্যতিত শুধু দুইজন জামিনদারের উপর নির্ভরশীল হয়ে ৬০ লক্ষ টাকা লোন প্রদান অযৌক্তিক ও বে-আইনী। এই বিষয়ে বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটি ইস্টার্ন ব্যাংকে একটি নোটিশ প্রদান করেছিল, যার কোন জবাব ব্যাংক কর্তৃপক্ষ প্রদান করেনি। ব্যাংক ঋণ প্রদানে জামানত ব্যতিত জামিনদার আইন বাতিলের দাবি জানানো হয়। পৃথিবীর সকল উন্নত রাষ্ট্রে লোন প্রদানের ক্ষেত্রে লোন গ্রহীতার পরিশোধ করার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে প্রদান করা হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাংক লুটেরা হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করে, আর ক্ষুদ্র লোন গ্রহীতা জামিনদারকে বে-আইনীভাবে গ্রেফতার, নির্যাতন, নিপীড়ন করে টাকা আদায় করছে।

লোন প্রদানের সময় জামিনদারদেরকে বলা হয়ে থাকে আপনি একটা স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু যখনই ঋণ গ্রহীতা কোভিড-১৯ এর পর আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়, তখনই এই স্বাক্ষীকে জামিনদার হিসেবে দেখিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়। এই আইন বাতিলের দাবি জানানো হয় এবং অবিলম্বে জামিনদার মুহাম্মদ মোস্তাক আহমেদসহ সারাদেশে জেল খানায় বন্দী সকল জামিনদারদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *