স্টাফ রিপোর্টার:
সরিষা ফুলের হলুদ বরণে সেজেছে সাতক্ষীরার মাঠের পর মাঠ। চলতি মৌসুমে জেলার প্রায় প্রতিটি মাঠজুড়ে চাষ হয়েছে সরিষা। ফুল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য বসানো হয়েছে আনুমানিক ৫ হাজার মৌ বক্স। যা থেকে ৭৭ থেকে ৮০ টন মধু উৎপাদনের আশা কৃষি বিভাগের।
শীতের সকালে সোনাঝরা রোদে ঝিকমিক করছে সরিষা ফুল। অপরূপ সৌন্দর্যে নতুন রূপে প্রাণ ফিরে পেয়েছে সাতক্ষীরার গ্রামীণ প্রকৃতি। সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির দল।
গতবছর সাতক্ষীরা জেলায় ১৯ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়। এবার কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছিল প্রয় ২০ হাজার হেক্টর। তবে অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতাসহ নানা কারণে চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে। সাতটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সরিষা চাষ করেছে সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায় চাষিরা।
সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে মৌচাষিরা। এজন্য মাঠের পাশে বসানো হয়েছে আনুমানিক ৫ হাজার মৌ বক্স। প্রতিটি চাক থেকে মৌসুমে ৫-৭ বার মধু সংগ্রহ করা যায়। বর্তমানে প্রতি মণ সারিষা ফুলের মধু ১৫-১৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারি সহায়তা পেলে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এছাড়া, এবারে ভেজাল মধু শনাক্তে ভ্রাম্যমাণ ল্যাবের মাধ্যমে মধু পরীক্ষা করছে নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর।
সাতক্ষীরা জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা বলেন, মোবাইল ল্যাবের মাধ্যমে এর আগেও মধু পরীক্ষা করেছি। এইভাবে আমরা মধুর ভেজাল শনাক্ত করেছি। এর মাধ্যমে আমরা মধু ব্যবসায়ীদের একটি বার্তা দিতে চাই তা হলো কেউ যদি মধুতে ভেজাল করে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সরিষা ক্ষেতের পাশে মৌ খামার স্থাপনের ফলে মৌমাছি মাধ্যমে ফুলের পরাগায়ন বৃদ্ধি পায়। ফলে সরিষার ফলন বাড়বে ১০-২০ শতাংশ।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মৌমাছি পালন করে অনেক বেকার যুবক তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছে। এ পর্যন্ত ৩০ জন কৃষক আনুমানিক ৫ হাজার মৌ বক্স বসিয়েছে। আশা করছি আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৭০ থেকে ৮০ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন এবার অর্জিত হবে।
ভ্রাম্যমাণ মধু খামারিরা সরিষা, বরই, লিচু ফুলের মধুর পাশাপাশি সুন্দরবনের পাশে মৌ বক্স স্থাপনের মাধ্যমে সারাবছর মধু সংগ্রহ করেন। এই খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে জেলার প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের।