মোঃ মাহমুদুল হাসান:
ভাতের পরই বাংলাদেশে যে খাদ্যটির চাহিদা বেশি সেটি হচ্ছে গম। কারণ,আটা ময়দার চাহিদা বেশি,সেটি আসে গম থেকে। দেশের মানুষের সকালের নাস্তার একটা বিরাট অংশজুড়ে থাকে গমের আটার রুটি বা ময়দার পরোটা। যদিও কয়েক বছর আগে ব্যাপকহারে গমে ব্ল্যাস্টের আক্রমণ হয়। পরপর কয়েক বছর চাষিরা গম চাষ করে ব্যাপকহারে লোকসানে পড়েন।
তবে এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলায় কৃষি জমিতে রেকর্ড পরিমাণে গমের আবাদ হয়েছে। বিগত বেশ কয়েক বছর গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া চাষিরা আবারও গমের আবাদ শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে চলতি বছরে গোমস্তাপুর উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ গম চাষবাদ হয়েছে বলে জানান কৃষি অফিস।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে গম চাষ করা হয়েছে। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৬ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে গোমস্তাপুর উপজেলার ৬ হাজার ২০০ জন কৃষকের মাঝে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় এ উপজেলার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে গম চাষে।
চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,গমে রোগ বালাইয়ের আক্রমণ কম হয়। সেচ ও সার কম লাগে তাই উৎপাদন ব্যয়ও কম। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে সঠিক পরিচর্যায় প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৭ মণ পর্যন্ত গম উৎপাদিত হয়।
গোমস্তাপুরের এক কৃষক বলেন,সরকারিভাবে প্রণোদনার বীজ ও সার পেয়ে আমার ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। মোটামুটি অনেক ভালো হয়েছে। ফলন ও ভালো পাবো আশা করছি।
আরেক কৃষক বলেন,গত কয়েক বছর আগে গম মাড়াই সমস্যার কারণে চাষাবাদে অনীহা এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন মাড়াই যন্ত্র আসার কারণে জমিতে গম চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় গম চাষে খরচ কম হয়। আবার গম মাড়াই করে গমের কাষ্টি জ্বালানি হিসাবেও ব্যবহার করা যায়।
গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার বলেন,এবার বড় পরিসরে গম আবাদ করা হয়েছে গোমস্তাপুর উপজেলায়। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর গমের আবাদ বেশি হয়েছে। গম চাষের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো তাও ছাড়িয়ে গেছে। আমরা প্রতিনয়িত মাঠে কৃষকদের পাশে থেকে পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর কৃষকরা গমের ভাল ফলন পাবেন।