কালুরঘাট রেল-কাম সড়ক সেতুর প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ পেলেন – প্রকৌশলীআবুল কালাম চৌধুরী নাগরিক কমিটির পক্ষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন

প্রভাস চক্রবর্ত্তী,বোয়ালখালী: 

 

কালুরঘাট রেল- কাম সড়ক সেতুর
কক্সবাজার রেল লাইনের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম চৌধুরীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

নদীর ওপর রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রেলওয়ের সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পের-প্রকল্প পরিচালক হিসেবে তাঁকেনিয়োগ দেয়া হয়েছে।

কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব পাওয়ার পর গতকাল বুধবার রেল ভবনে গিয়ে রেল সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী। এসময় তিনি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরবর্তী ধাপের বিষ্টায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করেন।

তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন গ্রামীন ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান নাজনীন সুলতানা, বোয়ালখালী নাগরিক কমিটির সভাপতি কাজী আল আমিন যাবের ছাবেরীসহ পৌরসভার, ইউনিয় ও শাখার

এই ব্যাপারে জানতে চাইলে কালুরঘাট নতুন সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষ নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন, অনেক বড় প্রকল্প, চ্যালেঞ্জিংও অনেক। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে আজকে রেল ভবনে আসলাম। পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে কথাবার্তা বলেছি। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, দোহাজারী-কক্সবাজার রেল লাইন আরো বড় প্রকল্প ছিল। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। কালুরঘাট সেতু নির্মাণের পরবর্তী পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রকল্পের কনসালটেন্ট (পরামর্শক) নিয়োগের টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে।

ঋণ চুক্তির শর্ত সাপেক্ষে টেন্ডারে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার পরামর্শক নিয়োগ দেয়া হবে। পরামর্শক নিয়োগের পর সেতুর ডিজাইন ফাইনাল হবে। এরপর ঠিকাদার নিয়োগ হবে। ভূমি অধিগ্রহণের ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, এখন ভূমি অধিগ্রহণের আইন পরিবর্তন হয়েছে। আগে পরামর্শক নিয়োগের পরপরই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হত। ডিসির ফান্ডে (এলএ ফান্ডে) অধিগ্রহণের টাকা জমা দিয়ে দিতে হতো। এখন নতুন আইনে ৭ ধারার নোটিশ জারির পরই ডিসির ফান্ডে টাকা জমা হবে। এই ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করে বিস্তারিত আলাপ করবেন বলে জানান প্রকৌশলী মুহম্মদ আবুল কালাম চৌধুরী।

রেল ভবন সূত্রে জানা গেছে, কালুরঘাট নতুন সেতুর পুরো টাকা দক্ষিণ কোরিয়ার। প্রকল্পের ১১ হাজার ৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকার মধ্যে ৭ হাজার ১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএফ)। অবশিষ্ট ৪ হাজার ৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা বাংলাদেশ সরকারের। ভূমি অধিগ্রহণ সরকারি অর্থায়নে হবে বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রামবাসীর বহুল প্রতীক্ষিত কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর দিয়ে রেল কাম সড়ক সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি গত বছরের ৭ অক্টোবর একনেক সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। মূল প্রকল্পের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ৭০০ মিটার রেল-কাম-রোড ব্রিজ নির্মাণ, ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২ দমমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ, ১১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজারের মধ্যে নির্বিঘ্ন ও নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে বর্তমান পুরাতন সেতুর পাশে কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল-কাম-সড়ক সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। রেলপথ মন্ত্রণালয় ২০৩০ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে রেল-কাম-সড়ক সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *