পুঠিয়া প্রশাসনের নাকের ডগায় চলছে রমরমা মাদক ব্যবসা!

স্টাফ রিপোর্টার:

 

রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভার আনাচে-কানাচে চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। পুঠিয়া থানার আশপাশ দিয়ে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাজা, টাপেন্টা নামক মাদক দ্রব্যের চলছে রমরমা ব্যবসা।

প্রশাসনের নাকের ডগায় এই অবৈধ ব্যবসাগুলো করে যাচ্ছে স্থানীয় কিছু বখাটেরা। মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী জানা যায় যে, এদের মাধ্যমে ব্যবসাগুলো করা হচ্ছে। তাদের মাথার উপরে ছায়া হয়ে রয়েছে কিছু সংখ্যক তথাকথিত অসাধু গডফাদার নেতারা।

প্রশাসন যেনো এদের দেখেও দেখেনা, চিনেও চিনেনা। অনেকটা খোলামেলাভাবেই চলছে মাদকের কারবারি ও সেবন। এতে করে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে অনেক সুশীল পরিবারের সন্তানেরা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের সন্তানেরা ও সন্তানের আগামী ভবিষ্যৎ। এমতাবস্থায়, পরিবারের অবিভাবকগণ অত্যন্ত চিন্তিত ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মাদকের খপ্পরে পড়ে মেধাবী ছাত্র ও যুবকেরা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এতে করে চুরি-ছিনতাই, হানাহানি ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এদের সম্পৃক্ততা বাড়ছে অপরাজনীতির সাথে। দলে ভাড়ি হচ্ছে কাঙ্গাল বাহিনী। তাই পৃষ্ঠপোষকতা করছে স্বযত্নে।

দিন শেষে সন্ধ্যা নেমে আসার সাথে সাথেই পুঠিয়ার বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়ে যায় মাদকের লেনদেন ও সেবনের এক মহোৎসব। কেউ কিছু বলার নেই, দেখারও নেই, প্রশাসন দেখেও যেনো দেখেনা।

কিছুদিন আগে পুঠিয়া পৌরসভা থেকে দুইজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেছিলেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অফিসার মহোদয়। কিন্তু জামিনে এসে তারা আবার রমরমা মাদক ব্যবসা চালাচ্ছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এর প্রতিবাদ করলে, তাদের উপরে চড়াও হচ্ছে এবং ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে এই মাদক ব্যবসায়ীরা।

কিছুদিন পূর্বে, মাদক ব্যবসায়ী দুই গ্রুপের ভিতরে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ ঘটে। এবং এই মাদক ব্যবসায়ী রানা বলেন, প্রতিদিন আমাকে চাঁদা দিতে হয় এক হাজার টাকা। মাদক ব্যবসায়ী রানা আরও বলেন, প্রতিদিন এক হাজার টাকা চাঁদা না দিলে, আমার বাড়িতে এসে হামলা এবং ভাঙচুর করে সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাহিনী।

পুঠিয়া ইউনিয়ন এবং পুঠিয়া পৌরসভার দুই ব্যক্তি মাদক সম্রাট নামে পরিচিত। তাদের মধ্যে একজন, পুঠিয়া পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের মিঠুন আলী তিনি বিশিষ্ট মাদকসম্রাট নামে এলাকায় পরিচিত। অথচ পুঠিয়া প্রশাসনের নাকের ডগায় মাদকের পাইকারি ও খুচরা ব্যাবসা করে যাচ্ছেন দেদারসে। এছাড়াও তিনি র‍্যাবের সোর্সখ্যাত একজন মাদক ব্যাবসায়ী। সে থানা থেকে ৪০০ মিটার দূরে এ ব্যাবসা পরিচালনা করে থাকেন। অথচ প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

এদিকে পুঠিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের গন্ডোগোহালি গ্রামের আরেকজন মাদক ব্যাবসায়ী রানা। তিনি ঐ এলাকার মাদক সম্রাট নামে পরিচিত। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে। দিন-রাত সমানতালে পাইকারি এবং খুচরা মাদক বিক্রয় করে যাচ্ছেন। সেখানেও প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই। এরা স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেও ব্যবসা করেছে নিশ্চিন্তে। এবং বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলেও কিছু অসাধু, চাঁদাবাজ, লুটতরাজকারী ও চোর নেতাদের ছত্রছায়াই ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাদেরকে সুশীল সমাজের ব্যাক্তিবর্গ বাঁধা দিলে, এই মাদক সম্রাটরা উত্তেজিত হয়ে হুমকি-ধামকি দেয়। এলাকার লোকজন ভয়ে কিছু বলতে পারেন না। এভাবেই পুঠিয়ায় স্থায়ীভাবে মাদক সাম্রাজ্য গড়ে উঠছে, ধ্বংস হচ্ছে সমাজিক মূল্যবোধ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *