সিরিয়া নিজেকে নিজেই মুক্ত করেছে, আর নিজেকে নিজেই নির্মাণ করাই তাকে সাজে: আহমেদ আল-শারা

স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক: 

 

পুনর্নির্মাণের জন্য সিরিয়ার এক ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। সিরিয়ার ইসলামপন্থিদের এক জাতীয় সংলাপে দেওয়া ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।

দামেস্কের প্রেসিডেন্ট ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে লাল গালিচায় হেঁটে শত শত সিরিয়াবাসী এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। গত বছর হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)- এর নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের অভুত্থানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে পর্যন্ত এই লাল গালিচা সম্বর্ধনা সীমিত ছিল, কেবলমাত্র কিছু বিশেষ বিদেশি অতিথিদের জন্য যারা বাশারের সঙ্গে দেখা করতেন।

গত মাসে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর আল শারা দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য তিনি দ্রুতই জাতীয় সংলাপ আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন।

মঙ্গলবার তিনি তার উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘সিরিয়া নিজেকে নিজেই মুক্ত করেছে, আর নিজেকে নিজেই নির্মাণ করাই তাকে সাজে।’

তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যেখানে রয়েছি, সেটা ব্যতিক্রমী, ঐতিহাসিক এবং দুষ্প্রাপ্য এক সুযোগ। আমাদের জনগণের এবং আমাদের দেশের স্বার্থের জন্য আমাদেরকে এর সুযোগ নিতে হবে। ’

শারা জোর দিয়ে বলেন, সিরিয়ায় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অভিন্ন এক সামরিক কমান্ডের অধীনে একত্রিত হতে হবে। তিনি বলেন, ‘একতাতেই শক্তি নিহিত। ’

অংশগ্রহণকারীরা ছয়টি কার্যকরী গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অন্তর্বর্তী বিচার ব্যবস্থা; সংবিধান; রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিনির্মাণ; ব্যক্তি স্বাধীনতা; ভবিষ্যতে সিরিয়ার অর্থনৈতিক মডেল এবং দেশের নাগরিক সমাজের ভূমিকা নিয়ে আলেচনা করেন।

আয়োজকরা বলছেন দিনের শেষে যে সব সুপারিশে সম্মতি পাওয়া যাবে তা সাংবিধানিক ঘোষণার রূপ দিতে পারবে যার লক্ষ্য হবে সিরিয়ার নতুন শাসন প্রণালীর মূল নীতিগুলো প্রণয়ন করা। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করবে একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার যারা ১ মার্চ ক্ষমতা গ্রহণ করতে যাচ্ছে।

প্রস্তাবকরা বলছেন, এই প্রক্রিয়া কয়েক দশক ধরে চলে আসা আসাদ সরকারের স্বৈরাচারি শাসন থেকে উল্লেখযোগ্যভাবেই পৃথক যখন রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বীদের জটিল এক কারারুদ্ধ ব্যবস্থায় আটক রাখা হতো।

সিরিয়ায় তিনজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত বলেন, এই সম্মেলনে সিরিয়ায় অবস্থিত কূটনীতিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। জাতিসংঘ এই সম্মেলনে সাহায্য দানের প্রস্তাব করেছিল, আয়োজকরা তা গ্রহণ করেননি।

জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ গোষ্ঠী হিসেবে এইচটিএস’এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে । যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও সিরিয়ার উপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলিতে কোন কোন ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *