ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

“আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছু করিনি, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে। ওই ছেলের জন্য ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ সাতি (শান্তি) চলে (গেছে)”- এভাবেই চিরকুট লিখে রেখে আত্মহত্যা করেছেন এক শিক্ষার্থী। নিহত শিক্ষার্থীকে পথে-ঘাটে ইভটিজিংসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে  ব্ল্যাকমেইল করায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পরিবারের।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে খান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থী নাজনিন জাহান কুমকুম (১৪) ওই বাড়ির নজরুল খানের মেয়ে এবং পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত কিশোর রিয়াদুল ইসলাম তৌসিফ (১৬) একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও শৌলা গ্রামের রিয়াজ চৌকিদারের ছেলে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে নিহত কিশোরীকে পথে-ঘাটে ইভটিজিং করে আসছিল প্রতিবেশী কিশোর তৌসিফ। বিষয়টি তারা তৌসিফের চাচা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল শুক্রবার নিহত কিশোরী ও তার এক সহপাঠী কিশোরের একসঙ্গে তোলা একটি ছবির সঙ্গে নোংরা মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় অভিযুক্ত তৌসিফ। এর পর খাতায় একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন কুমকুম।

পুলিশ জানায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। প্রথমে পরিবার নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে চায়নি। তাই বিষয়টিকে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনাজনিত অপমৃত্যু বলে স্থানীয়দের ও পুলিশকে জানায়। মরদেহ হাসপাতাল থেকেই বাড়িতে নিয়ে রাতে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। তখন স্থানীয়রা মরদেহের গলায় ফাঁসের মতো চিহ্ন দেখতে পায়। অন্যদিকে, মেয়ের রুমে খাতায় লেখা চিরকুটের সন্ধান পায় পরিবারের সদস্যরা। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করে পরিবার। রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ নিহত শিক্ষার্থীর বাড়িতে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানায় পুলিশ।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এক কিশোরের ইভটিজিংয়ের কারণে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারণা পরিবারের। এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগী পরিবার। তবুও অভিযোগের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *