আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে নৃশংস হত্যা: ৬ ডাকাত গ্রেপ্তার, লুণ্ঠিত স্বর্ণ ও অস্ত্র উদ্ধার

আলমাস হোসেন : 
সাভারের আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ দাসকে হত্যা ও স্বর্ণ লুটের ঘটনায় জড়িত ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সাথে লুট হওয়া ১৩ ভরি স্বর্ণ, নগদ ৭৬,০০০ টাকা এবং হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান।
এর আগে গত ৯ মার্চ রাত আনুমানিক ৯টার দিকে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক দিলীপ দাসকে তার স্ত্রী স্বরস্বতী দাসের সামনেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে ডাকাতরা। এরপর তারা স্বর্ণের ব্যাগ লুট করে দ্রুত পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপরই ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় পুলিশের একটি বিশেষ টিম তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তৎপরতার মাধ্যমে ৬ ডাকাতকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রিপন মিয়া (৪০) কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জের পিটুয়া বন্দের বাড়ি এলাকার মোঃ হক ভূঁইয়ার ছেলে, আরিফ প্রামানিক (৩০) পাবনা সুজানগরের ভবানীপুর শেখ পাড়ার এলাকার জোনাই প্রামানিকের ছেলে, শাহ-আলম (৪৫) পাবনা আতাইকুর সারাডাঙ্গা সরদারপাড়া এলাকার মৃত করিম শেখের ছেলে, শাহ-আলমের ভাই আরমান শেখ (৩৭), স্বর্ণ ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বাবু (৪৫) রাজমাহী কর্ণহার রাধানগর শল্লাপাড়া এলাকার মৃত মোসলেম উদ্দিনের ছেলে ও মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ (৪৫) কুমিল্লা দেবিদ্বার বৃষ্টিপুর এলাকার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে । এদের মধ্যে স্বর্ণ ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বাবু (৪৫) ছাড়া বাকি ৫ জন সরাসরি ডাকাতিতে অংশ নেয়।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান বলেন, গতকাল বিকেল ৩ টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সাভার, আশুলিয়া, রাজশাহী ও রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৬ জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। যাদের মধ্যে ৫ জন ডাকাত ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে হত্যার পর স্বর্ণ লুট করে এবং একজন ডাকাতি মালামাল তার জিম্মায় রাখে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সদস্য তারা দীর্ঘদিন ধরে সাভার-আশুলিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করে আসছে। ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে তারা একটি ভাড়াটে গাড়ি নিয়ে নয়ারহাট বাজারে আসে। ইমরান ও আকাশ গাড়ির ভেতরে অবস্থান নেয়, শাহ আলম ও আরমান পাহারা দেয়, তালিম ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, রিপন ও আরিফ ধারালো চাপাতি দিয়ে দিলীপ দাসকে কুপিয়ে হত্যা করে এবং মাসুদ রানা ওরফে কালা মাসুদ স্বর্ণের ব্যাগ নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে লুণ্ঠিত ১৩ ভরি স্বর্ণ, স্বর্ণ বিক্রির ৭৬,০০০ টাকা এবং হত্যায় ব্যবহৃত দুটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।
এসময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবীর, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলাম ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *