নতুন ধরনের আত্মঘাতী এবং নজরদারি ড্রোনের পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছেন কিম জং উন

স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:  

 

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নতুন ধরনের আত্মঘাতী এবং নজরদারি ড্রোনের পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেছেন, যা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি দ্বারা চালিত। বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির পেছনে রাশিয়ার সঙ্গে তার ক্রমবর্ধমান সহযোগিতার বড় ভূমিকা থাকতে পারে।

উত্তর কোরিয়া ২০২৩ সালের আগস্টে তাদের সামরিক ড্রোন উন্মোচন করেছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রাশিয়ার সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের কারণেই এই উন্নতি সম্ভব হয়েছে।

উত্তর কোরিয়া সম্প্রতি মস্কোর সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য রাশিয়ায় হাজার হাজার সেনা পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া বারবার সতর্ক করে বলছে, পিয়ংইয়ং ও মস্কোর মধ্যে প্রযুক্তি বিনিময়ের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়া বিপজ্জনক সামরিক সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

বৃহস্পতিবার কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার মানববিহীন প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে তৈরি বিভিন্ন ধরনের নজরদারি ও আত্মঘাতী ড্রোনের পরীক্ষা পর্যবেক্ষণ করেন। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, নতুন ধরনের কৌশলগত নজরদারি ড্রোন ভূখণ্ড ও সমুদ্রে শত্রু বাহিনীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা রাখে।

আত্মঘাতী ড্রোনগুলোরও পরীক্ষা করা হয়েছে, যা বিভিন্ন কৌশলগত হামলায় ব্যবহার করা যাবে। কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই ড্রোনগুলোর উন্নত কর্মক্ষমতা কিম জং উন পর্যালোচনা করেন এবং সেগুলো নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তিতে আপগ্রেড করা হয়েছে।

তিনি ড্রোনগুলোর ব্যাপক উৎপাদনের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন এবং বলেছেন, মানববিহীন প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে সেনাবাহিনীর আধুনিকায়ন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করতে যাওয়া উত্তর কোরিয়ার সেনারা গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিজ্ঞতা অর্জন করছে, যা ভবিষ্যতে পিয়ংইয়ংয়ের সামরিক সক্ষমতা আরও বাড়াতে পারে।

এছাড়া, কিম জং উন নতুন ইলেকট্রনিক জ্যামিং ও আক্রমণাত্মক অস্ত্র ব্যবস্থা তৈরির কাজ শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া এর আগেও দক্ষিণ কোরিয়ায় জিপিএস জ্যামিং হামলা চালিয়েছিল, যা দেশটির বেশ কয়েকটি জাহাজ ও বেসামরিক বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল।

চার মাস আগেই কিম জং উন আত্মঘাতী ড্রোনের ব্যাপক উৎপাদন শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই ড্রোনগুলো বিস্ফোরক বহন করে শত্রু লক্ষ্যবস্তুতে বিধ্বস্ত হতে পারে, যা কার্যত চালিত ক্ষেপণাস্ত্রের মতো কাজ করবে।

২০২২ সালে উত্তর কোরিয়া সীমান্ত পেরিয়ে ছোট আকারের ড্রোন পাঠিয়েছিল, যা দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী ভূপাতিত করতে ব্যর্থ হয়। এবার আরও উন্নত প্রযুক্তির ড্রোন উৎপাদনের ফলে কোরিয়ান উপদ্বীপে সামরিক উত্তেজনা আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *