গিরিজা কিশোর (জি,কে) আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপরাধ অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

লাগামহীন

নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজীপুর মহানগরীর ৩১ নং ওয়ার্ডের ধীরাশ্রম এলাকার গিরিজা কিশোর (জি. কে) আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন মোড়লের অপরাধ অনিয়ম আর দুর্নীতির শেষ নেই, বিদ্যালয় শিশু-কিশোরদের শিক্ষার স্থান হলেও এখানে চলছে নানামুখী অপরাধ অনিয়ম ও দুর্নীতি। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শ্রেণী পেশার লোক শিক্ষকদেরকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও সম্মান করে থাকে, শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষকদের সম্মান পিতা-মাতার সমপরিমাণ, অথচ শিক্ষকরাই এখন শিক্ষার নামে অর্থ বাণিজ্য করে চলেছে হরহামেশাই, বিভিন্ন পরীক্ষার নাম করে আদায় করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা, চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার ফরম ফিলাপের জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা, যেখানে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ছিল সাইন্সের শিক্ষার্থীদের জন্য ২২৪০ টাকা, কমার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য ২১৪০ টাকা, আর্টসের শিক্ষার্থীদের জন্য ২১২০ টাকা, সরকার কর্তৃক এসব নির্দেশনা থাকলেও এসব নিয়ম-নীতির তোয়াক্ক না করে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন গিরিজা কিশোর ( জি,কে) আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন মোড়ল।

যেসব শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা এই টাকা দিতে আপত্তি করছেন তাদের সাথে করা হতো চরম দুর্ব্যবহার, শুধু তাই নয় শিক্ষকদের ক্লাস রুটিনের যেসব নিয়ম পালন করার কথা প্রধান শিক্ষকের, তাও তিনি কোনভাবেই মানতেন না, মানে ও না আজও , কোন শিক্ষককে দিয়ে দশটি ক্লাস করান, আর কোন শিক্ষককে দিয়ে একটি দুইটি ক্লাস করান, এতসব অনিয়ম দুর্নীতির সাথে প্রধান শিক্ষক জড়িত থাকলেও প্রধান শিক্ষক সরকারি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারি অফিসারদের অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরকে কোন কথা বলতে দেন না।

অভিযোগ রয়েছে অত্র বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়েও রয়েছে চরম জটিলতা, আজও পর্যন্ত আয় ব্যয়ের হিসাব কাউকে বুঝিয়ে দেননি,এমনকি একটি স্বল্প পরিসরে ক্রিয়া অনুষ্ঠানের ব্যয়ভার দেখানো হয়েছে ( ৬) লক্ষ টাকা এর কোন সদুত্তর দিতে পারেনি আবুল হোসেন, বিদ্যালয় মাঠের বালু ভরাট দেখিয়ে আত্মসাৎ করেছেন আরও ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, সরকারি নির্দেশনা রয়েছে উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে আজীবন দাতা সদস্য হতে হলে তাকে ৬ লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে নিয়ম মাফিক, অভিযোগ রয়েছে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে ব্যঞ্চন মুজিবর নামে একজন লোককে আজীবন দাতা সদস্যের পদ দিয়েছেন আবুল হোসেন, তাও আবার স্কুল ফান্ডের টাকায়।

দুর্নীতি কত প্রকার ও কি কি তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক নামের এই দুর্নীতিবাজ শিক্ষক আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষক হলেও শিক্ষিকাদের প্রতি রয়েছে তার কুনজর, শিক্ষিকারদের কে শুধু একা তার রুমে যেতে বলেন, কয়েকজন শিক্ষিকা মিলে তার রুমে যেতে নিষেধ করেন, যদি যেতে হয় একা একা যেতে হবে তার রুমে, এছাড়াও আবুল হোসেন ব্যক্তি সুবিধা হাসিল করতে পিয়নের বেতন করেছেন একজন সহকারী প্রধান শিক্ষকের সমপরিমাণ, যেখানে প্রধান শিক্ষকের পাশাপাশি বেতন থাকার কথা সহকারি প্রধান শিক্ষকের, সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকের বেতনের মধ্যে রয়েছে আকাশ-পাতাল ব্যবধান এবং অন্যান্য শিক্ষকরাও সীমাহীন বৈষম্যের শিকার।

জি,কে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিবেশ ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য বিগত দিনগুলোতে অত্র বিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা স্কুলের চারপাশে প্রায় দুই যুগ আগে বৃক্ষ রোপন করেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকাদের সাথে কোন ধরনের পরামর্শ না করেই নিজের ফায়দা লোটার জন্য বিক্রি করে দিয়েছেন বিশাল প্রকৃতির বেশ কিছু গাছ, বিশাল আকারের বেশ কিছু গাছ বিক্রি করলেও কোন ধরনের টাকা স্কুল ফান্ডে রাখেননি আবুল হোসেন, অভিযোগ রয়েছে গাজীপুরে উচ্চপদস্থ শিক্ষা অফিসারদের সাথে আঁতাত করে এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই চালিয়ে যাচ্ছে আবুল হোসেন মোড়ল, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার থাকাকালীন সকল এমপি মন্ত্রীদের সাথে তার ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং তিনি নিজেও সক্রিয় কৃষক লীগ।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকার পতন হওয়ার পরপরই তিনি স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতাদের সাথে নিজের সুসম্পর্ক গড়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, কিছুটা সফলও তিনি হয়েছেন এখন বেশ কিছু বিএনপি নেতাদের সাথে তার ওঠা বসা, এতসব অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের নামে থাকে সেই শিক্ষক কিভাবে সেই প্রতিষ্ঠানে বহাল থাকে এমন প্রশ্ন উঠেছে জনমনে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন আবুল হোসেনের এসব অনিয়ম দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া উচিত শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের, জি,কে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম দুর্নীতি তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন সমাজের সচেতন মহল।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *