গাজীপুর জেলার টঙ্গী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দলিল লেখক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম এর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার:

 

একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এ সবকিছুর মূলহোতা ভেন্ডার সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম। সবাইকে ম্যানেজ করেই তিনি সমিতির কার্যক্রম চালাচ্ছেন। গোটা টঙ্গী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে তিনিই অঘোষিত রাজা ও চাঁদাবাজ । সন্ত্রাসীদের দিয়ে টঙ্গী সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে তিনি কায়েম করেছেন অনিয়ম দূর্নীতির রাজত্ব। ১ লাখ টাকায় ১০,৫০০ থেকে ১১,৫০০ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এবং জাহাঙ্গীর আলম এর নেতৃত্বে এসব চলছে ।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গী সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সাব–রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন আমরা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে চলি এবং আমাদের উপরে কর্মকর্তাদেরকে আমরা ম্যানেজ করি । উপরের কর্মকর্তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে ওরা বলে , কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়না। এলাকায় জমি রেজিস্ট্রির জন্য ১ লক্ষ টাকার দলিলের জন্য সরকার নির্ধারিত টাকা নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে টঙ্গী সাব–রেজিস্ট্রিারার বলেন, আমি এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত টাকার নেওয়ার বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, কেউ অতিরিক্ত টাকা চাইলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। আমি ব্যবস্থা নেব। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নিধার্রিত খরচের বাইরে কেউ অতিরিক্ত টাকা নিলে প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে  রেকর্ড রুমে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য চলছেই। কর্মকর্তাদের ভাগাভাগি নীতিতে বাড়ছে সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কঠোর না হওয়ায় জনমনে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন ও ক্ষোভ। রেকর্ড রুমের দায়িত্বে থাকা  সাব-রেজিস্ট্রার দলিলের সইমোহর নকল তোলার রেকর্ড রুম। সেবাপ্রার্থীরা নকল তুলতে তল্লাশিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ২০ টাকার কোর্ট ফি ও স্ট্যাম্প দিয়ে আবেদন করা হয়। একই সঙ্গে রেকর্ড কিপারের কাছে প্রতি নকলে জমা দিতে হয় ১৩৫০ টাকা।

জমির রেজিস্ট্রিকৃত মূল্য ও পাতা অনুযায়ী নকলপ্রতি গড়ে সরকার রাজস্ব পায় ৪০০-৫০০ টাকা। বাকি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা ঘুষ হিসেবে

রেকর্ড রুমে দৈনিক ৪০০-৫০০ নকলের আবেদন জমা পড়ে। মাসে জমাকৃত আবেদনের সংখ্যা দাঁড়ায় আট হাজার থেকে ১১ হাজার। নকলগুলো থেকে গড়ে ৮৫০ টাকা করে মাসে পৌনে এক কোটি টাকার বেশি ঘুষ আদায় করা হয়। স্বাক্ষর বাবদ নকলের সংখ্যা গুণে এই বিপুল টাকার বড় অংশ নেন সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম। বাকি টাকা রেকর্ড কিপারসহ অন্যদের মধ্যে পদ অনুযায়ী ভাগ-বাটোয়ারা হয়।

সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম গত বছরের ১৩ মার্চ গাজীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান করেন। তাকে যুগ্ম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি চলতি বছরের ২০ নভেম্বর অবসরে যাবেন।

দলিল লেখক সমিতির নেতৃস্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমকে সমিতির দু-একজন নেতা মদদ দিচ্ছেন। বিনিময়ে তারা কিছু বাড়তি সুবিধা ভোগ করছেন। বিপরীতে কাটা পড়ছে জেলাবাসীর পকেট।

তারা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, একজন দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা দুদকের একাধিক মামলার আসামি হওয়ার পরও কীভাবে ঘুষ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন? দুদক যদি চিহ্নিত ব্যক্তির দুর্নীতি প্রতিরোধে কোন ব্যবস্থা নিতে না পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের কী উপকার হল? জনস্বার্থে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে,সাব রেজিষ্টার জাহাঙ্গীর আলমকে একাধিক বার মুঠোফোন ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভি করেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *