বোয়ারখালী কালুরঘাটে নতুন সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ১৪ মে, জায়গা পরিদর্শনে রেল সচিব

প্রভাস চক্রবর্ত্তী: 

 

বোয়ালখালীতে কালুরঘাট নুতন সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্হাপন ১৪মে। সেতুর ৭০ মিটার উজানে কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন রেল-কাম রোড সেতুর নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কালুরঘাটে নতুন সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শনে রেল সচিব ১১এপ্রিল কালুরঘাটে নতুন সেতুর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের সম্ভাব্য জায়গা পরিদর্শনে করেন রেল সচিব মোহাম্মদ ফাহিমুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালুরঘাট রেল-কাম রোড সেতুর প্রকল্প পরিচালক রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমাসহ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রেল সচিব মো.ফাহিমুল ইসলাম নগরীর জানআলী রেলওয়ে স্টেশন, বিদ্যামান কালুরঘাট সেতু ও বোয়ালখালী পৌর সদরের গোমদণ্ডী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের মাঠ পরিদর্শন করেন।

তবে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান জানআলী হাট রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এখনো স্থান নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিশেষ সুত্রে জানাগেছে, ১৪ মে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামে আসবেন। তিনি ঐ দিন কালুরঘাট সেতু নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করবেন।

বৃটিশ আমলে নির্মিত বিদ্যমান পুরোনো কালুরঘাট সেতুর ৭০ মিটার উজানে হবে নতুন রেল-কাম রোড সেতু। এতে দুই লাইনের রেলপথ এবং দুই লেনের সড়কপথ থাকবে। যদিও সেতু নির্মাণের জন্য এখনো শুরু হয়নি ভূমি অধিগ্রহণ।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ৭-৮ মাসের মধ্যে শেষ হবে প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ। এরপর বিশদ নকশা প্রণয়ন এবং ভূমি অধিগ্রহণের কাজ। তারপর ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে দৃশ্যমান হবে সেতু নির্মাণ কাজ। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে চলতি বছরের গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প পরিচালক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ পেয়েছেন আবুল কালাম চৌধুরী।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সেতুটি নির্মাণে প্রয়োজন হবে প্রায় ১৪১ একর জমি। যা অধিগ্রহণ করার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এসব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে নির্মাণ কাজের। দরপত্রে শুধুমাত্র কোরিয়ান ঠিকাদার বা জয়েন্ট ভেঞ্চারের (জেভি) মাধ্যমে অন্যরা অংশগ্রহণ করতে পারবে। এ সেতু নির্মাণ কাজের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০৩০ সাল।

নতুন সেতুটি হবে সড়ক ও রেলের স্ট্যান্ডার্ড ডাবল লাইনের। মূল সেতুটি ৬০ ফুট প্রশস্ত ও দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার। উচ্চতায় নদীর পানির সর্বোচ্চ লেভেল থেকে ১২ মিটার। উচ্চতার সাথে লেভেল ঠিক রাখার জন্য এই প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত করা হবে উভয়পাশে প্রায় ৫ কিলোমিটার করে ১০ কিলোমিটার সড়ক। সেতুতে রেল চলাচলের জন্য ৩০ ফুটের মধ্যে ডাবল লাইন এবং সড়ক পরিবহন চলাচলের জন্য ৩০ ফুটের ডাবল লাইন নির্মাণ করা হবে। মূল প্রকল্পের মধ্যে থাকছে ৬ দশমিক ২০ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট নির্মাণ, ২ দশমিক ৪০ কিলোমিটার সড়ক ভায়াডাক্ট, ৪ দশমিক ৫৪ কিলোমিটার বাঁধ, ১১ দশমিক ৪৪ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক কাজ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, কোরিয়ার আর্থিক সহায়তায় কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর ‘কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর একটি রেল-কাম রোড সেতু নির্মাণ’ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেয়া হয়। এর আগে ওই বছরের জুন মাসে প্রকল্প বাস্তবায়নের অর্থায়ন নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সরকারের ঋণচুক্তি হয়েছিল।

এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১,৫৬০ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৪,৪৩৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা দিবে বাংলাদেশ সরকার এবং বাকি ৭,১২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা আসবে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিল (ইডিসিএফ) এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটিজ (ইডিপিএফ) কোরিয়া থেকে। ঋণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী দরপত্রে দক্ষিণ কোরিয়ার পরামর্শক নিয়োগে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগের পরপরই ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *