মুদ্রার এপিট ওপিট, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বহাল তবিয়তে

স্টাফ রিপোর্টার: 

 

‎মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে ফ্যাসিষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনার দোসররা ঢাকা মেট্রো কার্যালয়ের লোভনীয় সার্কেলে চাকুরী করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। অভিযানে নেই কোন সফলতা, অফিসে অনিয়ম, সিনিয়রদের সঙ্গে খারাপ আচরণ এমনকি অভিযানে আটক বানিজ্যের অভিযোগ থাকার পরও তারা বহাল তরিয়তে চাকুরী করার ফলে খোদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা কিংবা কর্মচারীদের মধ্যেই বিতর্কের সৃষ্টি হলেও ভয়ে কেহ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না, আবার অনেকে ভাল কাজ করেও ভাল পোষ্টিং না পাওয়ার ক্ষুদ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

‎মোঃ হাবিবুর রহমান, পরিচিতি নং ৩১১৬২, বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয় উত্তরের গুরুত্বপূর্ণ তেজগাঁও সার্কেলের উপপরিদর্শক হিসাবে কর্মরত। টাঙ্গাইলের ছেলে হাবিব ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিতুমির কলেজে পড়াকালীন সময়ে ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিল। ছাত্রলীগের ক্যাডার থাকার কারনে এবং সাবেক সৈরাচার সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছের লোক হওয়ায় তাকে ২০২০ ইং সালে তাকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকুরী দেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিজে। চাকুরীর শুরুতেই নারায়নগঞ্জ জেলা, এরপর মাত্র কয়েকমাস পরে ঢাকা মেট্রো কার্যালয় দক্ষিণের লোভনীয় কোতয়ালী সার্কেলে বদলী হয়। বিগত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট বিদায় হলে অজ্ঞাত ক্ষমতার জোরে বদলী হয় ঢাকা মেট্রো কার্যালয় উত্তরের লোভনীয় তেজগাঁও সার্কেলে। অথচ এই হাবীবের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে বাহিনীর তৎকালীন মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান তাকে এই লোভনীয় সার্কেলে বদলী করেন।

‎মোঃ আসহাব উদ্দীন চৌধুরী, পরিচিতি নং ৩১১৪৫, বর্তমানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয় দক্ষিণের গুরুত্বপূর্ণ কোতয়ালী সার্কেলের উপপরিদর্শক হিসাবে কর্মরত। অভিযোগ রয়েছে আসহাব উদ্দীন চৌধুরী ছাত্র জীবন থেকেই আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বিভিন্ন মাধ্যমে জানা যায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা কালীন সময়ে ছাত্রলীগের ক্যাডার ছিল। এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতির
‎পদ পাওয়াল কারনে সৈরাচার সরকারের সাবেক প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে নিজে পছন্দ করত যার কারনে সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল তাকে ২০২০ ইং সালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে চাকুরী দেন। সাবেক সৈরাচার শেখ হাসিনার কাছের লোক হওয়ায় চাকুরীর শুরুতেই বাগিয়ে নেন ঢাকা মেট্রো কার্যালয় উত্তরের লোভনীয় তেজগাঁও সার্কেল। এরপর আর তাকে পায় কে, তেজগাঁও সার্কেলে থাকাকালীন সময়ে কাওরান বাজারের মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের গডফাদার ছিলেন এই আসহাব উদ্দীন বলেও বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগ পাওয়া যায়। বিগত ৫ আগষ্ট সৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও কোন ভাবেই বেগ পেতে হয়নি আলোচিত সমালোচিত এই উপপরিদর্শককে। গত তিনমাস পূর্বে ঢাকা মেট্রো কার্যালয় দক্ষিণের লোভনীয় কোতয়ালী সার্কেলে বদলী হয়। অভিযোগ আছে মোটা অংকের টাকা আর ক্ষমতার জোরে আসহাব উদ্দিন চৌধুরী কোতয়ালী সার্কেলে বদলী হয়েছেন। আসহাব উদ্দিনের সঙ্গে সরেজমিনে কথা বলার জন্য তার অফিসে গেলে তাকে পাওয়া যায়না। এরপর কোতয়ালী সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার নিকট উপপরিদর্শক আসহাব উদ্দিনের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে জানান আসহাব উদ্দিন বিগত তিন দিন যাবৎ অফিসে আসেনা, কেন আসেনা জানিনা, তিনি ছুটিও নেননি বা মোবাইলেও জানাননি। কি বলব ভাই ক্ষমতাধর লোকতো, আমরা কিছু বললে আমাদের চাকুরী থাকবেনা।

‎শুধু হাবিব বা আসহাব উদ্দিনই নয়, এই তালিকায় আরো আছেন সাব ইন্সপেক্টর ফারহানা বিলকিচ, যাহার পরিচিতি নং ৩১২৮, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিতর্কিত, আলোচিত, সমালোচিত আর ক্ষমতাধর পটুয়াখালী জেলায় কর্মরত উপপরিচালক হামিমুর রশীদের স্ত্রী এবং নড়াইল জেলার পূত্রবধু ফারহানা বিলকিচ নানান কারনে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে থাকেন। সপ্তাহে একদিন অফিস করা, বাচ্চা নিয়ে অফিসে আসা, কথায় কথায় স্বামীকে দিয়ে চাকুরীচদ্রুত করাসহ নানান অভিযোগ এই ফারহানা বিলকিচের বিরুদ্ধে। এতসব অভিযোগের পরও স্বামী হামীমুর রশীদের ভয়ে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। ফারহানা বিলকিচের বিরুদ্ধে এতসব অভিযোগ থাকার কারনে মাত্র

‎কয়েকদিন আগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ঢাকা মেট্রো কার্যালয় দক্ষিণের লালবাগ সার্কেল হতে বদলী করেন ঢাকা জেলার ধামরাই সার্কেলে। অথচ শুধুমাত্র সার্কেলপরিবর্তন হলেও অন্য বিষয় পরিবর্তন না হওয়ায় এমন বদলী লোক দেখান এবং হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন অধিদপ্তরের অনেক কর্মকর্তা কর্মচারী।

‎এসব বদলী আর অনিয়মের বিষয়ে জানার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় মহাপরিচালকের বক্তব্যর জন্য তার অফিসে গেলে মহাপরিচালকের স্টাফ অফিসার ডঃ মোঃ আবু সাঈদ মিয়া এই প্রতিবেদককে জানান এসব বিষয়ে ডিজি স্যার কথা বলবেন না, আপনি পিআরও সঙ্গে কথা বলেন।

‎এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পাবলিক রিলেশন অফিসার সহকারী পরিচালক জনাব মোঃ মোস্তাক আহম্মেদ এই প্রতিবেদককে এসব অনিয়মের বিষয়ে জানান যে এসব বিষয় আমার জানা ছিল না, আপনি এদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিতে পারেন, জবাবে প্রতিবেদক কেন লিখিত দিতে হবে বললে পিআরও জানান আমি এ বিষয়গুলো ডিজি স্যারকে অবহিত করব এবং স্যার এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *