
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মতিঝিল রাজস্ব সার্কেল দনিয়া ভূমি অফিস এখন পরিণত হয়েছে ভূমি উপ- সহকারী কর্মকর্তা সঞ্জীব সেন এর ব্যাপক ঘুষ দূর্নীতি আর লুটপাট বাণিজ্যের অভয়ারণ্যে। এখানে সঞ্জীব সেনের কথায় শেষ কথা।
এখানে ঘুষ ছাড়া মেলেনা সেবা, নড়েনা ফাইল। রহস্যজনক কারণে কর্তৃপক্ষও নিশ্চুপ।
জানা গেছে নামজারী, এপি, ভিপি, এলএ, পেরীফেরীভূক্ত, ফিরনিবাস, হাট চাঁদনী বরাদ্দ নবায়ন ও তদন্ত রিপোর্টের নামেও চলছে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সঞ্জীব সেনের রমরমা লুটপাট বাণিজ্য। আর এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে তাঁকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাঁর সৃষ্ট সংঘবদ্ধ দালাল সিন্ডিকেট, কতিপয় দলিল লেখক।
প্রতি কর্মদিবসে সঞ্জীব সেনকে দেখা যায় দালাল পরিবেষ্টিত অবস্থায় অফিস টাইমের বাইরেও ভূমি অফিস চালু রেখে ব্যস্ত সময় পার করতে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, নামজারীতে সমস্যা আছে বলে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে টেনে নেন ২৫/৩০ হাজার থেকে শুরু করে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা। এছাড়া ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা ভায়া দলিলের ক্ষেত্রে হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
ভূক্তভোগী এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন আমার নামের বানান ভুল আছে এবং দাগ নাম্বারে সমস্যা আছে বলে আমার কাছ থেকে ডিসিআরএর টাকা বাদেও হাতিয়ে নিয়েছে দেড় লাখ টাকা। মূলত: এখানে ঘুষ ছাড়া মেলেনা সেবা, নড়েনা ফাইল।
এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডে তাঁকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে তাঁর সৃষ্ট সংঘবদ্ধ দালাল সিন্ডিকেট ও তার কথিত সহকারী এবং দলিল লেখক সমিতির কতিপয় মহুরার।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, সে দালালদের সাথে নিয়ে সকাল থেকে শুরু করে সন্ধ্যা বেলাতেও ধুমসে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কোনো গ্রাহককে এখানে সরাসরি ঢুকতে দেওয়া হয়না। যদি কোনো গ্রাহক বা ভূক্তভোগী কোনো কাজে অফিসে ঢুকে পড়লে তাকে সুকৌশলে বেড় করে দিয়ে দালাল বা দলিল লেখকদের সাথে কথা বলার ইঙ্গিত করা হয়।
এসিল্যান্ড সাহেবের কঠোর নির্দেশ গ্রাহক ছাড়া কোনো দালাল ভূমি অফিসে ঢুকবে না। অথচ এই আদেশ তোয়াক্কা করছে না ভূমি কর্মকর্তা সঞ্জীব সেন। তার চলন বলন আর ভাবভঙ্গি দেখলে মনে হবে, এটি কোনো সরকারি অফিস নয়, যেনো এটি তার আড্ডাবাজির বৈঠকখানা। তাই এখানে সঞ্জীব সেনের কথায় শেষ কথা, বাদবাকি সব হুকুমের গোলাম।
আর তাই প্রতি কর্ম দিবসেই কতিপয় দালাল ও দলিল লেখক সমিতির লেখকদের সাথে বিভিন্ন কাজের বিষয়ে তাকে প্রকাশ্যে দর কষাকষি করতে দেখা যায়।।
একাধিক ভুক্তভোগীরা বলেন, সঞ্জীব সেনের অফিসে দালাল বা দলিল লেখকদের না ধরলে এই অফিসে কোনো কাজই হয়না।
চতুর ভূমি কর্মকর্তা সঞ্জীব সেন বিগত শেখ হাসিনা সরকারের শাসনামলে নিজেকে শেখ হাসিনার কাছের মানুষ ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে তার কর্মস্থলগুলোতে নিজস্ব ক্ষমতার বলয় সৃষ্টি করে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট।
এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমন করতে জুলাই _আগস্ট ২০২৪ কতিপয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের মাঝে মোটা টাকা হস্তান্তর করেন বলে মতিঝিল দনিয়া এলাকাবাসী জানান।
এছাড়া জলমহাল, বালুমহাল ও হাটচাঁদনী বরাদ্দ নবায়নেও তিনি বড়ো ধরনের ঘাপলা ধারাবাহিকভাবে করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এতে ব্যক্তিগতভাবে ভূমি কর্মকর্তা লাভবান হলেও সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব।
তাই এই অফিস থেকে ভূমি কর্মকর্তা সঞ্জীব সেনকে অনতিবিলম্বে অপসারণ ও তাঁর অবৈধ সম্পদের খোঁজ তল্লাশী নিতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।।