আশুলিয়ায় লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি, স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

মোঃ বাবু তিস্তা:

 

ঢাকা জেলার সাভার আশুলিয়ায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে শতশত লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসি। ঔষধ প্রশাসনের নিয়মনীতি উপেক্ষা করে থানার ৪ টি ইউনিয়নের অলিতে গলিতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফার্মেসি। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চালিয়ে যাচ্ছেন ওষুধের ব্যবসা। অনেকে আবার চায়ের দোকান মুদির দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার সহ ঔষধ বিক্রি করে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে এলাকার কয়েক লাখ মানুষ চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।

সাধারণ জনগণের অভিযোগ, অলিতে গলিতে লাইসেন্স বিহীন ফার্মেসিগুলোতে জনগণের জীবন রক্ষাকারী ওষুধ নিয়ে চলছে ছিনিমিনি খেলা। অনেকেই জানেন না ঔষধ এর দাম ও মেয়াদ সম্পর্কে। এতে গলাকাটা বাণিজ্য ও মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধে রোগীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি ফার্মেসিগুলোতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা।

ঔষুধ প্রশাসনের আইনে বলা হয়েছে, দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনও ঔষুধ বিক্রি বা মজুদ রাখা যাবে না। ড্রাগ সার্টিফিকেট টানানো থাকতে হবে। ঔষুধ বিক্রয়ের সময়ে ক্রেতাদের প্রতিটি ও ঔষুধের নাম মূল্যসহ ক্যাশ মেমো প্রদান করতে হবে। ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনও ঔষুধ বিক্রি করা যাবে না। দেশীয় ঔষুধ ব্যতীত বিদেশি ঔষুধ বিক্রি করা যাবে না। এসব নিয়ম থাকলেও মানছেন না বেশি ভাগ ফার্মেসি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর ইউনিয়নের লাল পাহাড় এলাকায় বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ভাই ভাই ফার্মেসী অবৈধ চালিয়ে আসছে ইয়াকুব আলী নামের এক যুবক। কোন প্রকার লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট প্রশিক্ষণ ছাড়াই নিজের মন মতো ডাক্তারদের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ঔষুধ বিক্রি করে আসছে এই ভাই ভাই নামের ফার্মেসিতে। কোন প্রশিক্ষণ বা লাইসেন্স ছাড়াই ওই ফার্মেসীতে বসেই শিশু, বৃদ্ধ, গাইনি রোগিসহ নানা জটিল কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছে এই যুবক । আর গ্রামের সাধারণ জনগণ এই ফার্মেসির মালিককেই ডাক্তার মনে করে নিচ্ছেন বিভিন্ন রোগের ঔষুধ। এই এলাকার সাধারণ মানুষ কোন ঔষুধটি আসল কোনটি ভেজাল তা চিহ্নিত করতে পারে না। এর ফলে ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষুধের বাণিজ্যও ইয়াকুবের ফার্মেসিতে জমজমাট হচ্ছে। আর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে ইয়ারপুর ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশ ড্রাগিস্ট এন্ড কেমিস্ট সমিতির আশুলিয়া থানা উপ সাখার সভাপতি জহুরুল ইসলাম খান লিটন বলেন, আগে আমাদের অনেক ফার্মেসির ড্রাগ লাইসেন্স ছিল না। আমাদের সমিতির আওতায় আসার পর অনেকগুলোই ড্রাগ লাইসেন্স করেছে। সবাই তো আমাদের সমিতির না। এখন মুদির দোকানেও ওষুধ বিক্রি করছে। ইউনিয়নের অনেক ফার্মেসিগুলো আমাদের সমিতিতে নেই। আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভাই ভাই ফার্মেসির ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে সাভার সিভিল সার্জন বলেন, যে ফার্মেসি দোকানগুলোতে ড্রাগ লাইসেন্স নেই তারা ফার্মেসি দোকান চালু রাখতে পারবে না। আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধ ফার্মেসি বন্ধ করে শাস্তির ব্যবস্থা করব। অবৈধ ফার্মেসির বিরুদ্ধে আমাদের মোবাইল কোর্ট অভিযান শীঘ্রই পরিচালনা করা হবে বলে জানিয়েছেন সাভার সিভিল সার্জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *