বিআরটিএ-তে দুর্নীতির অভিযোগে আলোচনায় সহকারী পরিচালক মোঃ আসাদুজ্জামান

আনোয়ারুল হক:

 

দেশের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি দপ্তর হিসেবে পরিচিত সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না—এমন অভিযোগ সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। সম্প্রতি এই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের সুবিধা অনুযায়ী পরিচালনা করে আসছেন বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা হলেন মোঃ আসাদুজ্জামান, পিতা মোঃ মমিনদ্দীন ও মাতা নূরজাহান। তাঁর স্থায়ী ঠিকানা ৬৩৪/১ কামাল খান সড়ক, কাফরুল, ঢাকা। অভিযোগ রয়েছে, তিনি একসময় যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পিয়ন পদে চাকরি শুরু করেন এবং পরবর্তীতে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ডাইভার্ট করে বি.আর.টি.এ-তে উচ্চমান সহকারী পদে যোগ দেন। সেখান থেকে তিনি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা এবং পরবর্তীতে সহকারী পরিচালক (আইন) পদে পদোন্নতি পান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উচ্চমান সহকারী থাকা অবস্থায় তিনি তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি এবং পরে আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পরিচালক (প্রশাসন) মশিয়ার রহমানের ছত্রছায়ায় নিয়োগ বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, পদোন্নতি ও পদ সৃষ্টি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন। অভিযোগ আছে, তিনি তার আত্মীয়-স্বজনদের অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন, যার মধ্যে তাঁর ভাইয়ের মেয়ের জামাইও রয়েছেন।

এইসব অপকর্মের মাধ্যমে তিনি ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জমি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কাফরুল এলাকায় রয়েছে তার একটি পাঁচতলা বাড়ি। মশিয়ার রহমান অবসরে গেলেও আসাদুজ্জামান এখনো বিআরটিএ সদর কার্যালয়ে দাপটের সঙ্গে অবস্থান করছেন।

পরবর্তীতে বিআরটিএ-র চেয়ারম্যান হিসেবে ইউসুফ আলী মোল্লা দায়িত্ব নেওয়ার পরেও আসাদুজ্জামান তাঁর ছত্রছায়ায় নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যান। মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে নিয়োগবিধি নিয়ন্ত্রণের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

বর্তমানে বিআরটিএ-র চেয়ারম্যান মোঃ ইয়াসীন একজন সৎ ও নীতিবান কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত। সাধারণ মানুষের দাবি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার অবস্থান যেন আরও জোরালো হয় এবং বিআরটিএ-তে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করে মোঃ আসাদুজ্জামানের মতো কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *