
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার চিড়াইপাড়া এলাকায় এক সাংবাদিক পরিচয়ধারী ব্যক্তি ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে রাস্তা জবরদখল, মারধর এবং চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন এবং একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মোবারক হোসেন (৪৪), পিতা মৃত কদম আলী হাওলাদার, বন্দর উপজেলার চিড়াইপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। তিনি জানান, সরকারি পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ১৯৮২ সাল থেকে বসবাসরত পরিবারগুলো একটি ৬ ফুট প্রশস্ত রাস্তা ব্যবহার করে আসছিলেন। এই রাস্তার মুখেই বসবাস করেন অভিযুক্ত সাংবাদিক মোঃ আক্তার হোসেন তালুকদার (৩৫)। তিনি “নাগরিক টিভি” নামে একটি চ্যানেলের রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে রাস্তা দখলের চেষ্টা চালান।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, গত ২৬ এপ্রিল (শনিবার) দুপুর আড়াইটার দিকে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে রাস্তাটিতে ইট ফেলে দোকান ঘর নির্মাণের মাধ্যমে চলাচল বন্ধ করতে উদ্যত হন। বাধা দিলে তোবারেক ও তার ভাই মোবারক হোসেনসহ অন্যান্য স্বজনদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালানো হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিক পরিচয়ধারী আক্তার হোসেন লোহার সাবল ও ইট দিয়ে মোবারক হোসেনের মাথায় আঘাত করেন। তোবারেক হোসেনকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। মোবারকের স্ত্রী নাজমা বেগম এগিয়ে এলে তাকেও লাঠি দিয়ে পেটানো হয় এবং গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে।
এ সময় ভুক্তভোগীদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে মোবারক হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভুক্তভোগীরা আরও অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত আক্তার হোসেন তার সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেন। বিভিন্ন সময় স্থানীয়দের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি দখল করে একাধিক বাড়ির মালিক হয়েছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা বন্দর থানায় অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে গড়িমসি করে এবং আপস করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে শেষমেষ বাদীরা বিজ্ঞ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নারায়ণগঞ্জে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নম্বর: সি.আর. ১৬২/২৫/২০২৫)। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪, ৩২৫, ৩২৬, ৩০৭, ৩৮২, ৫০৬ (২) ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি, দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক, যাতে কেউ সাংবাদিকতার অপব্যবহার করে জনসাধারণকে জিম্মি করে না রাখতে পারে।