গোপালগঞ্জের মুকসেদপুর মুকুল জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে সরকারী চাকুরীতে যোগদান ও অবৈধ সম্পদ অর্জন

আনোয়ারুল হক :

গোলাম কিবরিয়া স্বপন মিয়ার ছোট ভাই মুকুল মিয়া বাটিকামারী স্কুল থেকে ১৯৯৪ সালে ঢাকা বোর্ডের অধীনে মানবিক শাখায় এসএসসি পাশ করেছে গোলাম শাহাদাত কবির মিয়া নাম দিয়ে (রোল নং-৬০৮৮০,০০০-১৩৫১ এবং জন্ম তারিখ ০১/০২/১৯৭৯)। সে অনুসারে ২০০৮ সালে তার সরকারি চাকরির বয়স শেষ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাদ্রাসা শিক্ষক জানান, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর নিজ গ্রাম বাহাড়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে সে অষ্টম শ্রেণিতে পাস করেছে মর্মে ১৯৯৯ সালে নিজের নাম পাল্টিয়ে শুধুমাত্র মুকুল মিয়া এবং জন্ম তারিখ ০১/০১/১৯৭৮ এর পরিবর্তে ০১/০৩/১৯৮৬ করে অর্থাৎ ০৮ বছর কমিয়ে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে। এরপর ভোটার তালিকা থেকে অবৈধভাবে শাহাদাত কবির মিয়া নাম বাতিল করে মুকুল মিয়া নাম অন্তর্ভুক্ত করে (জাতীয় পরিচয় পত্র নং-৩৫০৭৯৬৮০৮৫৬৪)। এই মুকুল মিয়ার জালিয়াতি চক্রে সক্রিয় সদস্য তার বড় ভাই স্বপন মিয়া, বড় বোন বর্তমান জয়েন সেক্রেটারি রোকেয়া বেগম এবং ভগ্নিপতি শামীম ফকির। মুকুল মিয়া সরকারী চাকুরীরত (প্রতিরক্ষা মন্ত্রনালয়ের মহা হিসাবরক্ষণ কর্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসাবে অবস্থায় ০১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাজার কমিটির প্রায় ১০ বছর সভাপতি হিসেবে ছিল এবং এখনও সে উক্ত দপ্তরে বহালতবিয়াতে কর্মরত আছে।


মুকুল মিয়া পিয়ন পোস্টের চাকরি নেওয়ার আগে অর্থ-সম্পদ বলতে তেমন কিছু ছিলো না। গ্রামের সাধারণ একটি পরিবারের মতই ছিলো। সে চাকরি জীবনে বহু লোককে ঘুষ নিয়ে ্বড় বোনের মাধ্যমে অনেক লোকজনকে চাকরি দিয়েছে। ঘুষের টাকা দিয়ে পুকুর ভারাট করে চারিদিকে বিশাল বাউন্ডারি দিয়ে ভেতরে অট্টালিকা ও গুদাম ঘর তৈরি এবং বাজারে কয়েকটি পাকা দোকান ঘর নির্মাণ করে। সুদে টাকা লাগানো, জমি কেনা ও বন্ধক রাখা সহ বিভিন্ন কৌশলে কালো টাকা সাদা করেছে। বিগত আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে একাধিক ব্যাংকে তার ভগ্নিপতি শামীম ফকির ও তার শশুর সোলেমান চৌধুরী সহ পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের নামে ব্যাংক-ব্যালেন্স জমা এবং ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন সহ সবাই বিভিন্ন স্থানে ভূমি ক্রয় করে ভবন নির্মাণ করে ধনী বনে গেছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ ও ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি সবো সরদারকে কৌশলে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়েছে দূর্নীতিবাজ স্বপন মিয়া বর্তমানে প্রভাব বিস্তারসহ নিরহ মানুষকে অপমান মূলক কথা বলে হুমকি প্রদান করছে। কারণ মঞ্জুর মোর্শেদ দুইবছর পূর্বে স্বপন মিয়ার দুর্নীতির কারখানা বাহাড়া মাদ্রাসায় যায়। মাদ্রাসা ভবন নির্মাণ এবং মাদ্রাসার কয়েক বিঘা জমির আয়-ব্যয় জনসম্মুখে প্রকাশ করতে বলে। প্রকাশ না করে সেই সময় স্বপন মিয়ার বোন রোকেয়াকে দিয়ে ইউএনওকে ম্যানেজ করে এবং থানা ম্যানেজ করে বহালতবিয়াতে এখনও গ্রামে প্রভাব বিস্তার করতেছে।


স্বপন মিয়া নব্বই দশকের ভাঙা কলেজের ছাত্রলীগের সম্পাদক ও বাটিকামারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১৬ বছর সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলো। অথচ তার বিরুদ্ধে ০৫ আগষ্টের পরে কোন মামলা হয় নাই, গ্রেফতারও হয় নাই। সে প্রশাসন ম্যানেজ করে চলছে। স্বপন মিয়া, মুকুল মিয়া ও শামীম ফকির এই ০৩ (তিন) জনের অত্যাচারে গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে আছে। স্থানীয় গ্রামবাসী ও জনগণ এই ০৩ (তিন) জন দূর্ণীতিবাজের বিরুদ্ধে এবং তাদের সহযোগি আশেপাশে থাকা তার পালিত কয়েক পাড়ার লোভী লোকদের কঠিন বিচার হোক এটা এলাকার নিরহ জনগন জোর দাবি তুলেছে। এদের সঠিক বিচার না হলে শান্তিপ্রিয় জনগনের এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে পরবে। এই মুকুলের বড় বোন রোকেয়া বেগম ১৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চাকরী করতেছেন। বর্তমানে রোকেয়া বেগম যুগ্ন সচিব (নাসিং এন্ড মিডওয়াফারি অধিশাখা) স্বাস্থ্য বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে কর্মরত আছেন। হাসিনার দোসর মন্ত্রী ফার“ক খান গ্রেফতার হয়ে জেলহাজতে থাকলেও তার ঘনিষ্ঠ ব্যাক্তি রোকেয়া বহালতবিয়তে কর্মরত আছেন। তার গ্রামের বাড়ি মুকসেদপুর এলাকাবাসী জানান এই রোকেয়া নিয়োগ বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এখনও অনেকের কাছ থেকে  টাকা নিয়ে কাউকে কাউকে চাকরি দিয়েছে আবার দু এক জনের চাকরি দিতে এখনও পারেননি।
এই রোকেয়ার আরেক ভাই স্বপন সে এক সময় গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলেন।  এখানেই থেমে নেই তার ভগ্নিপতি শামীম সেও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের দোসর সাবেক মন্ত্রী ফার“ক খানের বিশস্ত নেতাকর্মী স্বপন, মুকুল, শামীম-এর বিচার চায় এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *