স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
গত বছরের ৫ আগস্ট গণআন্দোলনের মুখে তৎকালীন সরকারের পতনের পর একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে। জনগণের গভীর প্রত্যাশা ছিল, নতুন এই সরকার দুর্নীতি, গুম, খুন ও অর্থ পাচারের মতো অপরাধের বিচারে দ্রুত অগ্রগতি ঘটাবে।
আট মাসে কিছু কাঠামোগত সংস্কার শুরু হলেও, সব প্রত্যাশা পূরণ এখনো সম্ভব হয়নি। বাস্তবতা হলো, একটি দীর্ঘকালীন শাসনব্যবস্থার পর কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনতে সময় ও সামষ্টিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
এই বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘কৈফিয়ত কিংবা বাস্তবতা’ শীর্ষক একটি পোস্টে অত্যন্ত খোলামেলাভাবে সরকারের সীমাবদ্ধতা, রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ছাত্রদের ভূমিকাসহ নানা বিষয়ে আলোকপাত করেছেন।
তিনি বলেন:
“ক্ষমতার ভারসাম্য একক কারও হাতে নেই। সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে সবকিছু বদলে যায় না। রাজনৈতিক দল, আমলাতন্ত্র, বিচার বিভাগ, এমনকি নাগরিক সমাজের ভূমিকা—সবই মিলেই কাঠামোগত পরিবর্তন সম্ভব।”
ছাত্র-জনতার ভূমিকায় বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন,
“ছাত্রদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও নৈতিক অবস্থান ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন সম্ভব নয়। রাষ্ট্রব্যবস্থায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”
তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, অনেকেই আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছেন, কিন্তু একক প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। বাস্তব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামোতে আরও অনেক শক্তি সক্রিয়, যাদের সমন্বয় ছাড়া দ্রুত অগ্রগতি সম্ভব নয়।
তিনি স্বীকার করেন,
“বিভাজন, অভিজ্ঞতার ঘাটতি এবং আদর্শগত দুর্বলতা ছাত্রদের শক্তিকে দুর্বল করেছে। তাই আমাদের নিজেদের ভেতরেই সততা, আদর্শ এবং ঐক্য ফিরিয়ে আনতে হবে।”
তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মতে,
“আলোচনা, আত্মসমালোচনা ও একযোগে কাজ করলেই কেবল আমরা একটি নতুন, ন্যায়ভিত্তিক এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার দিকে এগোতে পারবো।”
অন্তর্বর্তী সরকারের এই সময়কে তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ রূপান্তরের সূচনা হিসেবে দেখছেন, যেখানে সবাই মিলে ধৈর্য ও ইতিবাচক অংশগ্রহণের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের পথে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।