স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
২০০৯ সালের পিলখানা ট্র্যাজেডির বিস্ফোরক মামলায় দ্বিতীয় দফায় আরও ৪০ জন বিডিআর সদস্য জামিন পেয়েছেন। ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া গত ৮ মে এ জামিন মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আবেদনকারীদের নথিপত্র যাচাই-বাছাই শেষে আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী শাহাদাৎ হোসেন নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি একই মামলায় ১৭৮ জন আসামিকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। পরে তারা ২৩ জানুয়ারি কারাগার (কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুর) থেকে মুক্তি পান।
জামিনপ্রাপ্তদের নাম
জামিন পাওয়া ৪০ জন বিডিআর সদস্য হলেন:
রেজাউল করিম, শাজাহান, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, মো. শামীম, ওয়ালি উল্লাহ, হাবিবুর রহমান, তারিকুল ইসলাম, বনি আমিন চৌধুরী, মো. এ বারিক, ইমতিয়াজ আহমেদ নবীন, মোয়াজ্জেম হোসেন, মিজানুর রহমান, সিদ্দিকুর জামান জোয়ার্দার (লিটন), মো. এ মোনাফ, আকিদুল ইসলাম, খলিলুর রহমান, কৌতুক কুমার সরকার, মো. সালাউদ্দিন, সোহরাব হোসেন, কামাল হোসেন, মো. ইশহাক, দারুল ইসলাম, শ্রী সুমন চক্রবর্তী, আবু সাঈদ, সেজান মাহমুদ, মো. সেলিম, বিধান কুমার সাহা, মাসুম হাসান, ফিরোজ মিয়া, শ্রী তাপস কুমার বিশ্বাস, কামাল মিয়া, নূর-এ-আলম মিয়া, এনামুল হক, শফিকুল ইসলাম, রবিউল আলম এবং আল আমিন।
ঘটনার পটভূমি
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা দায়ের হয়।
হত্যা মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করা হয়, যাতে:
-
১৫২ জনের ফাঁসি,
-
১৬০ জনের যাবজ্জীবন,
-
২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং
-
২৭৮ জন খালাস পান।
অপরদিকে, ২০১০ সালে বিস্ফোরক আইনের মামলায় ৮৩৪ জন আসামির বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়। ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে দেওয়া রায়ে:
-
১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়,
-
১৮৫ জনের যাবজ্জীবন,
-
২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং
-
২৮৩ জন খালাস পান।
আপিল ও তদন্ত কমিশন
হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষও ৮৩ জনের খালাস ও সাজা হ্রাসের বিরুদ্ধে আপিল করেছে।
এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর এই ঘটনার নতুন তদন্তের দাবি জোরালো হলে গত ২৪ ডিসেম্বর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ. ল. ম. ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে সরকার। কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।