আব্দুর রশিদ, সাতক্ষীরা:
আশাশুনিতে সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিগত স্বৈরশাসকের নেতাকর্মীদের ঘনিষ্ঠজন ঠিকাদার বিগত দিনের মতো বর্তমানেও বহাল তবিয়তে অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে কাজ চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর অর্থায়নে কুল্যা টু দরগাহপুর সড়কে ২ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস.আর. ট্রেডার্স। ঠিকাদার শেখ সোহেল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য পরিচয়ে আওয়ামী লীগের দাপটে বিভিন্ন কাজ করেছেন বলে জানা যায়।
নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, খোয়া এবং অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠলেও উপজেলা এলজিইডি অফিস রয়েছেন নীরব ভূমিকায়। স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা অনিয়মের অভিযোগ এনে কাজ বন্ধের অনুরোধ করলেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেননি। অনিয়মের মাধ্যমে কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এস.আর. ট্রেডার্সের ম্যানেজার কবির ও নাজমুল হোসেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আশাশুনি উপজেলায় উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও সংশ্লিষ্টদের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে কাজের গুণগতমান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। তারা বলেন, এ রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে রাস্তাটি টেকসই হবে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে। নিম্নমানের পুরনো ইটের খোয়া ছিটানো হচ্ছে, এবং ভাঙা ইটের রাবিশ দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। পুরনো সড়কের পিচ না তুলে তার উপরেই নতুন কাজ শুরু করা হয়েছে।
রাস্তার কাজে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মেহেদী হোসেন দায়িত্বে থাকলেও তিনিও রয়েছেন নীরব।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আরিফুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম বলেন, “কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হচ্ছে। এস্টিমেট অনুযায়ী কাজ করার কথা থাকলেও অনুমোদনবিহীন নিম্নমানের খোয়া ও বালি দিয়ে কাজ শেষ করার পাঁয়তারা চালানো হচ্ছে। উপজেলা এলজিইডির অনেক প্রকল্পের কাজ প্রভাব খাটিয়ে যেনতেনভাবে শেষ করা হচ্ছে।”
অভিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস.আর. ট্রেডার্সের সোহেল হোসেন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “কাজ ভালো ইট দিয়ে হচ্ছে। আপনারা এলজিইডি অফিসে কথা বলেন।”
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলী অনিন্দ্যদেব সরকার সরেজমিনে না গিয়ে বলেন, “আমার অফিসের লোক তো আছেই, সে তো কাজ করছে। বিষয়টি দেখছি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে জানাবো।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কৃষ্ণা রায় বলেন, “এই সড়কে অনিয়ম হচ্ছে, সেটা আমার জানা নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি এলজিইডি কর্মকর্তার সাথে কথা বলব।”