ঘোড়াশালের প্রধান সড়কের বেহাল দশা বড় বড় গর্ত, জনদুর্ভোগ চরমে

আনোয়ার হোসেন আনু: 

নরসিংদীর পলাশ উপজেলার প্রধান সড়ক ঘোড়াশাল বাইপাস-ঘোড়া চত্বর সড়কটি স্থায়ী সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে বড় বড় অসংখ্য গর্ত হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও যান চালকদের। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে এসড়কে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সার কারখানা, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, প্রাণ-আরএফএল, স্যামরি ডায়িং, জুট মিলসহ অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চলাচল করে। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্কুল-কলেজের যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। কিন্তু সড়কে বড় বড় গর্ত থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে যানবাহন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘোড়াশাল বাইপাস-ঘোড়াচত্বর এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে যায়। সড়কের উপরের পিচ উঠে অনেক জায়গায় জমেছে ১ থেকে ৩ ইঞ্চি পর্যন্ত কাঁদা। এমন বেহাল দশার সড়কে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে কাভার্ডভ্যান, অটোরিকশা, ট্রলি, ট্রাকসহ কয়েক শতাধিক যানবাহন চলাচল করছে। এর ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এসব যানবাহন।

অটোরিকশা চালক শাহাজাল মিয়া জানান, এখানের এক কিলোমিটার পথ যেতে ৪০ সেকেন্ড সময় লাগার কথা। কিন্তু বড় বড় গর্ত থাকার কারণে চার মিনিট সময় লাগে। অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হয়। আমাদের গাড়ির বেশ ক্ষতি হয়।

আরেক অটোরিকশা চালক মজিবুরর রহমান জানান, এটি সড়ক, নাকি খাল, বোঝাই যায় না। অনেক ভয় নিয়ে সড়ক পার হতেন আগে। এখন বড় গর্ত ও পানি থাকায় এ সড়ক দিয়ে রিকশা নিয়ে যাওয়া যায় না। যাত্রীরা এখন আর এই সড়কে আসতে চায় না। তাই উপার্জনও কমে গেছে

সড়কের পাশের ব্যবসায়ী আবদুল্লাহ মারুফ বলেন, ‘আমার দোকানের সামনে বড় বড় গর্ত, বৃষ্টি হলে পানি জমে, বৃষ্টি না হলে প্রচুর দুলাবালু উড়ে ও যানবাহনের প্রকট শব্দে সমস্যা হচ্ছে। ক্রেতারা এই সড়ক দিয়ে দোকানে আসছে না। পণ্য বিক্রি কমে গেছে। ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই এখন কঠিন হয়ে গেছে।

আলাউদ্দিন নামে এক বৃদ্ধ আক্ষেপ করে বলেন, আগে ফ্যাসিস্ট সরকারে জনপ্রতিনিধিরা উন্নয়নের বুলি উড়াত কিন্তু বাস্তবে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক গুলোর সংস্কার করেনি। ৩ বছর ধরে রাস্তাটির বেহাল দশা। মানুষজন অসুস্থ হলে হাসপাতালেও নেয়া যায় না। এখন তো তারা পালিয়েছে। এখন সংস্কার না হলে আর কবে সংস্কার হবে এই রাস্তা?’

শিক্ষার্থী শাওন, রাফসান ও অভিভাবকরা জানান, এ সড়ক দিয়ে কয়েকটি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী নিয়মিত যাতায়াত করে। বিভিন্ন স্থানে গর্তে পানি জমে থাকে। আর এ গর্তে জমে থাকা কাদাপানি ছিটকে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়। অবস্থা এতই খারাপ যে, হেঁটেও চলা যায় না।

পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঘোড়াশাল পৌর সভার দায়িত্বে থাকা পৌর প্রশাসক মো: আবু বকর সিদ্দিকী জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য নরসিংদী প্রশাসনের সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হবে।

নরসিংদী সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রেজা-ই রাব্বি জানান, এই সড়কটি পরিদর্শন করা হয়েছে, খুব শীগ্রই ঠিকাদারের মাধ্যমে সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *