মোঃ মানিক:
আলোচিত আছিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হিটু শেখকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে মামলার বাকি তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৭ মে) সকালে মাগুরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে হিটু শেখকে ধর্ষণ ও হত্যা প্রমাণিত হওয়ায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অধীনে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্ত তিনজন হলেন—আছিয়ার বোনের স্বামী সজিব শেখ, শাশুড়ি জাহেদা খাতুন এবং দেবর রাতুল শেখ।
রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আছিয়ার মা আয়েশা খাতুন বলেন,
“হিটু শেখের ফাঁসির রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে বাকি তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে, যা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।”
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট মনিরুল ইসলাম মুকুল বলেন,
“বাদী এ রায়ে সন্তুষ্ট হননি। আমরা আপিলের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়োগপ্রাপ্ত বিশেষ কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী জানান,
“খালাসপ্রাপ্ত তিনজনের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আলামত নষ্টের অভিযোগ থাকলেও পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন।”
মামলার পটভূমি
গত ১ মার্চ আছিয়া বড় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যান। সেখানে ৬ মার্চ ধর্ষণের শিকার হন তিনি। গুরুতর অবস্থায় মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর ও ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহতের মা ৪ জনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ চার আসামিকেই গ্রেপ্তার করে এবং তদন্ত শেষে ১৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও যুক্তিতর্ক শেষে মাত্র ২১ কার্যদিবসে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় এবং শনিবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।