স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর কদমতলী থানাধীন ধোলাইপাড় এলাকায় মাত্র ১,৭০০ টাকা মাসিক বেতনে কাজ করা এক গৃহকর্মীকে নৃশংস নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হলেও, পুলিশ এখনও কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। মামলার বাদীপক্ষ জানিয়েছে, তারা এখন উল্টো ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকির মুখে পড়েছেন।
ভুক্তভোগী পলি বেগম (৩০), পিতা- লালু ফকির, একজন বিধবা নারী। তিনি দুই মাস ধরে বিক্রমপুর গার্ডেন সিটির বাসিন্দা মোঃ নাদিম (৪৫) এবং তার স্ত্রী বর্ণা (৩০)-এর বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বেতন ছিল মাসিক ১,৭০০ টাকা। দুই মাসের মোট বকেয়া ৩,৪০০ টাকা চাইতে গেলে, ১০ মে বিকেল ৪টার দিকে তার ওপর চালানো হয় অমানবিক নির্যাতন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পাওনা টাকা চাইলে আসামি নাদিম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এরপর স্বামী-স্ত্রী মিলে ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে তাকে কিল-ঘুষি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা জখম করে। এমনকি পরিহিত কাপড়-চোপড় টেনে শ্লীলতাহানি করা হয়। পলি বেগমের চিৎকার শুনে ভবনের দারোয়ান ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে তারা পালিয়ে যায়।
ঘটনার ছয়দিন পর, ১৬ মে ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ শাহীন কদমতলী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা গ্রহণ হলেও, এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। মামলাটি হয়েছে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩৫৪ ও ৫০৬ ধারায়।
মোঃ শাহীন অভিযোগ করেন, “আমার বোন মাত্র ৩,৪০০ টাকা দাবি করেছিল, আর সেই কারণেই তার ওপর এই পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। এখন মামলা করায় আমাদেরকে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। পুলিশ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।”
সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের পক্ষ হয়ে সোহাগ ও ইমন মামলার বাদীকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আসামিদের বেশিরভাগই মাদকাসক্ত। স্থানীয়রা জানান, নাদিম ও তার স্ত্রী বর্ণা নিয়মিত মাদকসেবনে আসক্ত এবং এলাকায় তাদের বিরুদ্ধে আরও নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, “ওদের বিরুদ্ধে আগে থেকেও অনেকে অভিযোগ করতে সাহস করেনি, কারণ তারা ভয়ংকর হুমকি দিয়ে থাকে।”
এলাকাবাসীর আশঙ্কা, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় বড় ধরনের সংঘাত বা দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠন ও সামাজিক নেতারাও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কদমতলী থানার কোনো কর্মকর্তার আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।