স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনে সেনাবাহিনীকে উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তিতে সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছে প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, জিম্মি উদ্ধারের অভিযান এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণে তাদের এজিওর ক্লাউড সেবা ব্যবহার করা হয়েছে।
তবে তারা জোর দিয়ে বলেছে, এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরাসরি গাজায় হামলা বা সাধারণ মানুষের ক্ষতির কোনো প্রমাণ তাদের হাতে নেই।
মাইক্রোসফটের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত স্বাক্ষরহীন এক ব্লগ পোস্টে এই তথ্য জানানো হয়, যা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এই প্রথম প্রকাশ্যে গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে নিজেদের সম্পৃক্ততার স্বীকৃতি। যদিও বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক ছিল। বিশেষ করে, তিন মাস আগে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)-এর এক অনুসন্ধানে জানানো হয়, হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ইসরাইলি বাহিনী বেসরকারি এআই প্রযুক্তি ব্যবহারে ২০০ গুণ বেশি নির্ভরশীল হয়ে ওঠে, যেখানে মাইক্রোসফটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
এপি’র প্রতিবেদন অনুসারে, গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য অনুবাদ, যাচাই ও বিশ্লেষণে মাইক্রোসফটের এজিওর ক্লাউড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এবং সেগুলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীর এআই-চালিত টার্গেটিং সিস্টেমে মিলিয়ে দেখা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ধরনের এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের আশঙ্কা, এতে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাতে পারে।
মাইক্রোসফট জানায়, কর্মীদের উদ্বেগ ও সংবাদমাধ্যমের নানা প্রতিবেদন সামনে আসায় তারা একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি একটি স্বাধীন বাহ্যিক সংস্থাকেও এই বিষয়ে তথ্য যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সেই সংস্থার নাম কিংবা তাদের রিপোর্ট এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
প্রতিষ্ঠানটি আরও জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দি ব্যক্তিদের উদ্ধারে তারা ‘বাণিজ্যিক চুক্তির গণ্ডি ছাড়িয়ে’ কিছু জরুরি প্রযুক্তি সহায়তা দিয়েছে। যদিও তারা এখনো পরিষ্কার করে বলেনি, সেই প্রযুক্তি ইসরাইলি বাহিনী কীভাবে ব্যবহার করেছে বা তদন্তকারীরা ইসরাইলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কিনা।
এই স্বীকারোক্তি এমন এক সময়ে এল, যখন গাজায় ইসরাইলি অভিযানে নিহতের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের যুদ্ধ-সহযোগিতা নিয়ে নৈতিক বিতর্ক তীব্রতর হচ্ছে।