স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানাধীন বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের নামে চলছে দেদারসে অসামাজিক কার্যকলাপ। প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বাইরে বড় করে সাইনবোর্ডে লেখা “আবাসিক হোটেল” হলেও এর ভেতরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ ঢাকার অন্যতম প্রবেশদ্বার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত লোকজন অস্থায়ীভাবে রাত্রিযাপনের জন্য এসব হোটেলে ওঠেন। অথচ বেশিরভাগ হোটেলেই নেই থাকার উপযোগী পরিবেশ। এর বদলে সেখানে চলছে মাদক সেবন, দেহ ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপ।
যাত্রাবাড়ির ‘আয়শা মনি’ হোটেলের মালিক মাদক ব্যবসায়ী তারেক ও তোফাজ্জেল। পাশেই ‘মেঘনা’ নামে একটি আবাসিক হোটেল রয়েছে যার মালিক শফিক ও খালেক। ‘হোটেল রোজ গার্ডেন’-এর মালিক জাকির, শপন এবং ম্যানেজার গাজী।
‘আবাসিক হোটেল তাজ’-এর মালিক জাহিদ ও জসিম। ‘আবাসিক হোটেল আল শাহিন’-এর মালিক জাহিদ কনক ও জসিম। ‘হোটেল আল হায়াত’-এর মালিক সবুজ ও ম্যানেজা্র ইমরান ও আকাশ। জানা গেছে ইমরান সরাসরি মাদক বিক্রির সাথে জরিত। ‘হোটেল গ্রিন ভিউ’-এর মালিক মো. আলী ও সোহাগ। ‘হোটেল ঢাকা টাইমস’-এর মালিক আলম ও নুর ইসলাম।
এসব হোটেলে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই চলে মাদক সেবন ও পতিতাবৃত্তি।
সম্প্রতি ওয়ারী জোনের এডিসি আকরাম এবং যাত্রাবাড়ি থানার ওসি (অপারেশন) খালিদ হাসানের নেতৃত্বে এসব হোটেলে অভিযান চালানো হয়। অধিকাংশ মালিক পালিয়ে গেলেও ধরা পড়ে বেশ কয়েকজন পতিতা ও খদ্দের। পুলিশ জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অন্যদিকে, সায়েদাবাদের জাকির টাওয়ারে অবস্থিত ‘রোজ গার্ডেন হোটেল’-এর মালিক মো. জাকির ও স্বপন, যারা দীর্ঘদিন ধরে একই ধরনের অসামাজিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছেন।
হোটেল মালিকরা গর্ব করে বলেন, “পুলিশ তাদের কাজ করে, আর আমরা আমাদের কাজ করি। পুলিশ তো আমাদের নিয়ে সারাদিন ভাববে না, তাদের আরও কাজ আছে—যা আমরা ভালো করেই বুঝি। একদিকে ধরে নিয়ে যায়, আরেকদিকে আমরা আবার শুরু করি। এই ব্যবসা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে, ভবিষ্যতেও হবে।”
স্থানীয়দের দাবি, যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ থানার আশপাশে আবাসিক হোটেলের নামে পরিচালিত পতিতা ও মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।