নতুন সংবিধান ও ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতির ডাক দিল এনসিপি

স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:


জুলাই ঘোষণা, জুলাই সনদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিকে সামনে রেখে সক্রিয় হচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সোমবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও ওই পোস্টে এসব বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি তিনি।

এর আগে সোমবার দুপুরে দেওয়া আরেকটি ফেসবুক পোস্টে রাষ্ট্র, মুক্তিযুদ্ধ, ধর্ম ও নারীর অধিকারসহ সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এনসিপির দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ। সেই মুক্তিযুদ্ধের সাম্য, ইনসাফ ও মানবিক মর্যাদার চেতনা এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই এনসিপির পথচলা শুরু হয়েছে।

এনসিপি তার রাজনৈতিক অবস্থানে ধর্মতান্ত্রিক বা সেকুলারিস্ট কোনোটিকেই একমাত্র আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে না বলে জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, দলটি ধর্মীয় সহাবস্থান, সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সম্মান বজায় রেখে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ধর্ম ইসলাম—এর নৈতিকতা, মানবিকতা এবং বাঙালি মুসলমানের ভাষা ও সংস্কৃতিকে এনসিপি মূল্যায়ন করে। একই সঙ্গে সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও জাতিগত জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেয় দলটি।

নারীর মর্যাদা ও ক্ষমতায়নকে এনসিপির অন্যতম মূলনীতি উল্লেখ করে দলটির আহ্বায়ক বলেন, পারিবারিক আইনের আওতায় নারীর সম্পত্তির ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে এনসিপি কাজ করবে। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও নেতৃত্ব বিকাশে দলটি সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের আধিপত্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদকে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ও ভূরাজনৈতিক হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, এই প্রবণতার বিরুদ্ধে এনসিপি কঠোর রাজনৈতিক অবস্থান নেবে। তিনি জানান, বাংলাদেশ যেন ন্যায্যতা, মর্যাদা ও জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে অন্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলে—এটাই এনসিপির অবস্থান।

অর্থনৈতিক ভিশন প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি একটি বৈষম্যহীন, ইনসাফভিত্তিক, দুর্নীতিমুক্ত ও কল্যাণমুখী আর্থসামাজিক ব্যবস্থা গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন, শ্রম অধিকার ও কর্মসংস্থানের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠবে এনসিপির নীতিনির্ধারণ। এছাড়া বঙ্গোপসাগর ঘিরে একটি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার ভিশনও রয়েছে তাদের।

সবশেষে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলুপ্ত করে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনই এনসিপির প্রধান রাজনৈতিক কর্তব্য। এজন্য প্রয়োজন রাষ্ট্রীয় কাঠামো পুনর্গঠন, প্রতিষ্ঠান সংস্কার এবং একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *