বরুড়ায় প্রকল্প ছাড়াই বিল উত্তোলন

মোঃ আনজার শাহ:

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) নামে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন না করেই বিল উত্তোলনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ঘটকপুর এলাকায় এই অনিয়মের ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

২০২১-২২ অর্থবছরে এডিপির আওতায় ঘটকপুর খলিল চেয়ারম্যান বাড়ির সংলগ্ন ব্রীজ থেকে খালের পাশে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণের জন্য ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৯১০ টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘শাহজাহান টেকনো বিল্ডার্স’ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। কিন্তু সাইট পরিদর্শনে দেখা যায়, এই এলাকাতেই এলজিইডির অর্থায়নে ২০২২ সালের ৭ জুলাই রাস্তা পাকা করণসহ ৩০০ মিটার প্রতিরক্ষা ওয়াল নির্মাণ করা হয়। যার ব্যয় ছিল মাত্র ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকা এবং সেই কাজ বাস্তবায়ন করেন ঠিকাদার খলিলুর রহমান।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, নতুন করে কোনো কাজ হয়নি; পুরনো এলজিইডি প্রকল্পকেই দেখিয়ে উপজেলা প্রকৌশল অফিস থেকে এডিপির বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জামাল হোসেনও জানান, “এটি মূলত এলজিইডির কাজ। রাস্তা ও ওয়াল একসঙ্গে করা হয়েছে।”

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকল্পটির পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেন বরুড়া উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আঃ মন্নান। তিনি আরএফকিউ (রিকোয়েস্ট ফর কোটেশন) পদ্ধতি ব্যবহার করে পূর্বে সম্পন্ন হওয়া এলজিইডি প্রকল্পকেই নতুন প্রকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেন এবং বিল অনুমোদনের জন্য কাজের তদারকি ও বিল প্রস্তুতিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।

উল্লেখ্য, শাহজাহান টেকনো বিল্ডার্সের মালিক রোবায়েত আহমেদ উৎসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বলেন, “আমার হাতে অনেক কাজ, ফাইল দেখে বলতে পারবো।” পরবর্তীতে সরাসরি যোগাযোগের কথা বললেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে বরুড়া উপজেলা প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, “আমি এখানে নতুন যোগ দিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে না দেখে মন্তব্য করতে পারবো না।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, এই অনিয়ম ও দুর্নীতির মূল নায়ক হচ্ছেন উপসহকারী প্রকৌশলী আঃ মন্নান। তারা এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *