স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
রাজধানীসহ সারা দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এক ভয়াবহ পরিকল্পনা করেছিল শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইন ও তার বাহিনী। টার্গেট ছিল বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। হত্যার মাধ্যমে তিন দলকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
এই চক্রান্তে অর্থ ও অস্ত্র সহায়তা দিয়েছেন নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা, আর মাঠপর্যায়ে পরিকল্পনার প্রধান সহযোগী ছিলেন সুব্রতের শিষ্য আবু রাসেল মাসুদ ওরফে মোল্লা মাসুদ।
গোয়েন্দা জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে এসেছে, প্রতিবেশী একটি দেশ থেকে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে বিপুল অর্থ। সেই অর্থে সংগঠিত করা হচ্ছিল এলিট শ্রেণির কিশোর ও তরুণ ‘শ্যুটার’ বাহিনী। কুষ্টিয়া সীমান্তে আস্তানা গড়ে ঢাকায় অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল মগবাজার, শাহবাগ, গুলশান ও বাড্ডার সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া।
মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানা পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার পর গোয়েন্দা হেফাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদে এই তথ্য উঠে আসে। বুধবার আদালত সুব্রত বাইনকে ৮ দিন ও তিন সহযোগীকে ৬ দিনের রিমান্ডে দিয়েছেন।
সুব্রত বাইন আদালতে বলেন, “আমারও তো পরিবার আছে। আমি ১৯৮৭ সাল থেকে প্রতিবাদ করিনি। ২০২২ সালে আয়নাঘরে আমাকে রড দিয়ে মারা হয়, সেদিন রাত ৩টায় আমাকে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়।”
তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, পরিকল্পনা ছিল, টার্গেট কিলিংয়ের পর সংবাদে প্রচার করা হবে যে, এক দলের নেতাকে প্রতিপক্ষ দল হত্যা করেছে। এতে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি ও হানাহানি বাড়বে, আর এর ফায়দা নেবে আওয়ামী লীগ।
সুব্রত বাইন জানান, ২০০১ সালে চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার নাম ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকায় আসে। তখন তিনি দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। বিএনপি তাকে ফিরিয়ে না নেওয়ায় তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করতে বাধ্য হন।
এ ঘটনায় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষ দাবি করে, আসামিদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র উদ্ধারের তথ্য পাওয়া গেছে এবং আরও অনেক জড়িত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে রিমান্ড প্রয়োজন।
তদন্ত চলছে। গোপন ক্যাডার তালিকা ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।