কক্সবাজার প্রতিনিধি:
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ৬০ লাখ টাকার বিনিময়ে সরকারি চেক অবৈধভাবে হস্তান্তরের অভিযোগ উঠেছে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার বাকীরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করছেন—মহেশখালীর কালারমার ছড়া এলাকার রহমত আলী পরিবারের সম্পত্তি সরকারিভাবে অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু জায়গা নিয়ে অপর পক্ষের সঙ্গে কিছুটা বিরোধ থাকায় গত ২৫ মার্চ একটি মিস মামলা করা হয় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার শুনানির জন্য।
আদালতের কোনো আদেশ না আসার পূর্বেই ৬০ লাখ টাকার বিনিময়ে সরকারি চেক দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠে সার্ভেয়ার বাকীরুলের বিরুদ্ধে।
তবে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ তার উল্টো। তাদের দাবি, দেয়ালের ফেস্টুনে এসব নীতিকথা ও অভিযোগের কথা লেখা থাকলেও ফোন রিসিভ করেন না কেউ। এমনকি অফিসে উক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করা যেন সোনার হরিণ। দিনের পর দিন বসে থেকেও মেলে না কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎ, শোনা হয় না কোনো অভিযোগ।
এদিকে দেখা যায়, ভূমি অধিগ্রহণ সার্ভেয়ার বাকীরুলের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে। ইতিপূর্বে দুর্নীতির কারণে তাকে দুদকের মুখোমুখি হতে হয়েছে একাধিকবার। গত ২৪ এপ্রিল বাকীরুলের বদলির আদেশ হলেও তিনি দাপটের সঙ্গে নিজের কর্মস্থলেই কাজ করে যাচ্ছেন।
অন্য একটি বিভাগীয় কমিশনারের চিঠিতে দেখা যায়, বাকীরুল ইসলামের নানা অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে।
দুর্নীতি, ঘুষ, অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে বাকীরুলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি ক্যামেরা দেখে সটকে পড়েন। কখনো দু’তলায়, কখনো তিনতলায় লুকোচুরি করতে থাকেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক পর্যায়ে ক্যামেরার মুখোমুখি হলে তিনি বলেন, তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না। কিন্তু আমাদের গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায়, তিনি বলেন এই সব তিনি অফিসের নির্দেশে করেছেন।
এদিকে ভূমি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তিনি এসব বিষয়ে অবগত আছেন বলে জানা গেছে।
রহমত আলীর মামলার অ্যাডভোকেট জসিম বলেন, রহমত আলী ওয়ারিশগণের নামে চেক হয়েছিল। প্রতিপক্ষের আপত্তির কারণেই চেকগুলো স্টপ করে শুনানিক্রমে চেকগুলো বাতিল করা হয়েছে। এলও কর্মকর্তা আউয়াল সাহেব শুনানিতে বলেছেন, দুই পক্ষের দুইজনকে পৃথকভাবে লিখিত আবেদন ও প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য যার যার অংশের পক্ষে আবেদন দাখিল করতে। বর্তমানে আদালতে তিনটি মামলা রয়েছে, যার মামলা নম্বর—৪৪৭/২০২২, ১২৪৫/২১ এবং ১৩১/২১। তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার ভূমি অধিগ্রহণ শাখা দুর্নীতি ও ঘুষের কারণে জর্জরিত। এখনই পদক্ষেপ না নিলে বাকীরুল সব ধ্বংস করে দেবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. সালাউদ্দীন বলেন, দালাল ও এলএ শাখার কোনো কর্মকর্তা যদি ঘুষ ও কমিশন লেনদেনের প্রমাণে জড়িত থাকে, তাহলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।