যাত্রাবাড়ি-সায়েদাবাদে হোটেলের নামে মাদক ও দেহ ব্যবসা,মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে

স্টাফ রিপোর্টার: 

রাজধানীর যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ এলাকায় আবাসিক হোটেলের আড়ালে দেদারসে চলছে মাদক ও দেহ ব্যবসা। বাইরের সাইনবোর্ডে ‘আবাসিক হোটেল’ লেখা থাকলেও ভেতরে চলছে অসামাজিক কার্যকলাপের জমজমাট কারবার। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত সাধারণ যাত্রীরা এখানে রাত্রিযাপন করতে এসে পড়ছেন প্রতারণার ফাঁদে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ থানাধীন অনেক হোটেলেই দীর্ঘদিন ধরে চলছে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। যাত্রাবাড়ির হোটেল ‘আয়শা মনি’র মালিক তারেক ও তোফাজ্জেল, ‘মেঘনা’র মালিক শফিক ও খালেক, ‘রোজ গার্ডেন’র মালিক জাকির ও শপন, ‘আল হায়াত’র ম্যানেজার ইমরান (যিনি সরাসরি মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে), ‘ঢাকা টাইমস’র মালিক আলম ও নুর ইসলাম, হোটেল রংধনু: মালিক মমিনসহ অনেকেই এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় জড়িত।

সায়েদাবাদের জাকির টাওয়ারে অবস্থিত ‘রোজ গার্ডেন হোটেল’ও দীর্ঘদিন ধরে একই অপরাধে জড়িত। স্থানীয়রা জানান, এসব হোটেলে দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা চলে মাদক সেবন ও পতিতাবৃত্তি। হোটেল মালিকদের দাবি, পুলিশ ধরা খেলেও আবার তারা চালিয়ে নেয় ব্যবসা। এক হোটেল মালিক বলেন, “পুলিশ তাদের কাজ করে, আমরা আমাদের কাজ করি। একদিকে ধরে নেয়, আরেকদিকে আবার শুরু করি।”

এই পরিস্থিতি নিয়ে দৈনিক স্বাধীন সংবাদে প্রতিবেদন প্রকাশের পর যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ ২৮ মে সন্ধ্যায় অভিযান চালায়। ‘আবাসিক হোটেল পদ্মা’ ও ‘আবাসিক হোটেল টাইমস’ থেকে তিনজন যৌনকর্মী, দুইজন খদ্দের এবং হোটেল ম্যানেজারকে আটক করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (অপারেশন) খালেদ। পুলিশ জানায়, এসব হোটেলে দীর্ঘদিন ধরেই অসামাজিক কার্যকলাপ চলছিল।

যাত্রাবাড়ী থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অন্যায়-অনিয়ম যেখানে থাকুক, পুলিশ সেখানে থাকবে। কোনো অসামাজিক কার্যকলাপ বরদাশত করা হবে না। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, অভিযান হলেও মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। তারা দাবি করেছেন, শুধু নিচুতলার কর্মচারীদের আটক করলেই চলবে না—হোটেল মালিকদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।

স্থানীয়দের দাবি, যাত্রাবাড়ি ও সায়েদাবাদ এলাকায় আবাসিক হোটেলের নামে চলা অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে নিয়মিত ও কঠোর অভিযান চালাতে হবে। একইসঙ্গে এসব হোটেলের কার্যক্রম সরকারিভাবে তদারকি ও পর্যবেক্ষণের আওতায় এনে সুনির্দিষ্ট আইন প্রয়োগ করতে হবে। নয়তো এমন অপরাধ সমাজে আরও বিস্তার লাভ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *