পতেঙ্গা থানায় ওসিকে জানালেও বন্ধ হয়নি দেহ ব্যবসা

কামরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম:


চট্টগ্রাম মহানগরীর পতেঙ্গা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান অসামাজিক কার্যকলাপ, বিশেষ করে দেহ ব্যবসা, বন্ধে পুলিশের দায়িত্বশীল ভূমিকার অভাব দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। যদিও পতেঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, “অভিযান চালানো হচ্ছে”, তবে মাঠপর্যায়ে তেমন কোনও কার্যকর উদ্যোগ বা দৃশ্যমান অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শুধু আবাসিক হোটেলেই নয়—বিভিন্ন ভাড়া বাসা, গেস্ট হাউস এবং এমনকি বিউটি পার্লারের আড়ালে—চলছে দেদারসে দেহ ব্যবসা। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উঠতি বয়সী তরুণী থেকে শুরু করে গৃহবধূ, গার্মেন্টস কর্মী, এমনকি ছাত্রীরাও এই কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে নানা কারণে—যেমন দারিদ্র্য, প্রেমে ব্যর্থতা, মাদকাসক্তি, পারিবারিক নির্যাতন, কিংবা সহজে অর্থ উপার্জনের আকাঙ্ক্ষা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র এসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের দরিদ্র পরিবার থেকে মেয়েদের চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে শহরে এনে এ ব্যবসায় জড়াতে বাধ্য করা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার ‘স্বামী-স্ত্রীর’ পরিচয়ে ভাড়া বাসায় থেকে দেহ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে, যেটি আশেপাশের বাসিন্দারা টের পেলেও ভয়ে মুখ খোলেন না।

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট, জিইসি, আগ্রাবাদ, নিউ মার্কেট, ২নং গেইটসহ বিভিন্ন এলাকায় এমন কর্মকাণ্ডের বিস্তার দেখা যাচ্ছে। ফয়েজ লেক, স্বাধীনতা পার্ক, পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় আবাসিক হোটেল ও গেস্ট হাউজগুলোকেও ব্যবহৃত হচ্ছে এই অসামাজিক কার্যকলাপের নিরাপদ ঘাঁটি হিসেবে।

স্থানীয় অভিভাবকরা জানান, শহরে ছদ্মবেশে চলা এই দেহ ব্যবসা তাঁদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর শঙ্কা সৃষ্টি করছে। কেউ কেউ মনে করেন, সামাজিক সচেতনতার পাশাপাশি পুলিশি অভিযান আরও জোরদার না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “আমরা নিয়মিত অভিযানে যাচ্ছি, তবে এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকেও সচেতন ও সহযোগিতা করতে হবে।”

এহেন অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রয়োজন পুলিশের কঠোর পদক্ষেপ, স্থানীয় জনসচেতনতা এবং সামাজিকভাবে একসাথে কাজ করা। তা না হলে হাজার অভিযান চালিয়েও এর স্থায়ী সমাধান আসবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *