যৌতুকের দাবিতে নির্যাতিত রোজিনা, আশ্রয় এখন বাবার বাড়ি

নাছিমা খাতুন সুলতানা:

নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার আশুজিয়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মোঃ এন্টাস মিয়ার মেয়ে মোছাঃ রোজিনা আক্তার যৌতুকের জন্য স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের শিকার হয়ে বর্তমানে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

জানা যায়, ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর একই ইউনিয়নের নগুয়া গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে নুরুল আমীনের সঙ্গে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক রোজিনার বিবাহ সম্পন্ন হয়। দুই আড়াই বছর সংসার ভালোভাবে চললেও পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন—শাশুড়ি, ননদ ও ননাস—রোজিনার ওপর অহেতুক মিথ্যা অভিযোগ তুলে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু করে।

রোজিনার অভিযোগ, স্বামী নুরুল আমীন তার কথায় কর্ণপাত না করে বরং শ্বশুরবাড়ির প্ররোচনায় তাকেও মারধর করত। একপর্যায়ে নুরুল আমীন সাব-কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ শুরুর কথা বলে রোজিনার বাবার বাড়ি থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। সংসারের কথা চিন্তা করে রোজিনা তার বাবা ও ভাইদের কাছ থেকে টাকা এনে স্বামীকে দেন। এরপর তারা ঢাকায় চলে যান।

কিন্তু ঢাকায় যাওয়ার এক মাসের মধ্যেই স্বামী পুনরায় রোজিনাকে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পথচারী এক নারী রোজিনাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সুস্থ হওয়ার পর রোজিনা ঐ নারীর বাড়িতে আশ্রয় নেন এবং পরে বাবার বাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।

এরপর থেকে স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কেউ রোজিনা বা তার মেয়ের খোঁজ নেননি। এ নিয়ে এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে দুইবার সালিশ বসানো হলেও কোনো সমাধান হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাব খাটিয়ে নুরুল আমীন ও তার পরিবার সালিশ এড়িয়ে গেছে।

রোজিনা বলেন, “আমি বিচার চাই। আমি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

রোজিনা ও তার পরিবার জানিয়েছেন, তারা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *