ডেমরার আ.লীগের দোসর ছাত্র জনতা হত্যাকারী আতিকুল্লাহ আতিককে রক্ষায় ব্যাস্ত ভাই রতন চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার:


দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ বাংলাদেশের মানুষের উপর জুলুম, অত্যাচার ও নির্যাতন করে দেশ শাসন করেছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা, হামলা ও গুম-খুনের মতো ঘটনা ঘটাতো ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। মিছিলে চালাতো গুলিবর্ষণ, গুলির ভয়ে মানুষ মিটিং-মিছিলে যেতে ভয় পেত। ওই সময় হাসিনা সরকারের দোসররা বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও থানা বিএনপি, জামায়াত ও নানান দলের নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর, অফিস-আদালত জোর করে দখল করতো। প্রতিবাদ করলেই নেমে আসতো পুলিশ, র‌্যাবের নির্যাতন। বাধ্য হয়েই নেতাকর্মীরা বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্পত্তি ফেলেই পালিয়ে বেড়াতো।

বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি-ঘর, জমিজমা দখলকারীদের মধ্যে অন্যতম ডেমরা থানার আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আতিকুল্লাহ আতিক। এই আতিকুল্লাহ আতিক ছিলেন কাউন্সিলর। কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিকের নেতৃত্বে বিএনপির নেতাকর্মীদের ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা কমিটির লিস্ট করে থানা পুলিশের কাছে দিত। আতিকুল্লাহ আতিক ও পুলিশ মিলে নির্যাতন করতো বিএনপি, জামায়াতসহ নানান দলের নেতাকর্মীদের। বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে শত শত মামলা, হামলা, নির্যাতন হলেও বহাল তবিয়তে ছিলেন আওয়ামী দোসর কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিকের বড় ভাই রতন চেয়ারম্যান।

দুই ভাই মিলে চুক্তি করে যে, আওয়ামী লীগের আমলে রতন চেয়ারম্যানের সকল সম্পত্তি পাহারা দেবে ভাই কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিক। আবার যদি কখনো বিএনপি ক্ষমতায় আসে, তাহলে কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিকের সম্পত্তি পাহারা দেবে বড় ভাই রতন চেয়ারম্যান। অর্থাৎ তাদের চিন্তা—আওয়ামী লীগ হোক কিংবা বিএনপি, ক্ষমতায় আসুক—দুদিক থেকেই খাবো।

বিএনপির অবস্থা খারাপ দেখে আওয়ামী লীগের দোসর কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিক বড় ভাই রতন চেয়ারম্যানকে কৌশলে আমেরিকায় পাঠিয়ে দেন। ৫ই আগস্টের পর আওয়ামী লীগের দোসর কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিক পালিয়ে যায় আর দেশে ফিরে আসে রতন চেয়ারম্যান। রতন চেয়ারম্যান দেশে এসেই হয়ে যান বিএনপির বড় নেতা আর পাহারা দিতে শুরু করেন আওয়ামী দোসর আতিকুল্লাহ আতিকের জবরদখলকৃত হাজার হাজার বিঘা জমি ও বাড়ি-ঘরসহ নানান সম্পত্তি।

বর্তমানে রতন চেয়ারম্যানের ক্ষমতা এতই বেড়েছে যে, আওয়ামী লীগের দোসর কাউন্সিলর আতিকুল্লাহ আতিকের অবৈধ টাকা দিয়ে বিএনপির বড় বড় নেতা ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে নামমাত্র মূল্যে হাতিয়ে নিয়েছেন ডেমরা আমুলিয়া গরুর হাটের ইজারা।

রতন চেয়ারম্যানের এই অলৌকিক কাণ্ড দেখে হতবাক শত শত মামলা, হামলা ও নির্যাতিত নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা বলছেন, এ যেন ভাই ভাইয়ের খেলা। এরা আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে নিয়ে খেলছে। মূলত, এরা ভূমিদস্যু ও নির্যাতনকারী।

বর্তমানে ডেমরা থানার কমিশনার ও আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রতন চেয়ারম্যানের ভাই আতিকুল্লাহ আতিকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী তীব্র সমালোচনা করছেন। তার বিরুদ্ধে প্রায় ২১টি ছাত্র হত্যা মামলা রয়েছে এবং তিনি বৈষম্য ছাত্র আন্দোলনের সময় নিরীহ ছাত্রদের ওপর গুলিবর্ষণের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে অভিযুক্ত।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী সরকার থাকাকালীন সময়ে আতিকুল্লাহ আতিক ও তার পরিবার বিএনপির অসহায় ও নিরীহ মানুষের প্রায় তিন শত বিঘা জমি আমুলিয়া মডেল টাউনে অবৈধ দখল করেছে। বর্তমানে আতিকুল্লাহ আতিক ও তার পরিবার গরুর হাটের ইজারা নিয়েছে বলে জানা গেছে।

এছাড়াও, আতিকুল্লাহর বড় ভাই রতন চেয়ারম্যান সরকারি চাপের কারণে বিএনপির আন্দোলন থেকে পালিয়ে আমেরিকায় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। ৫ আগস্টের পরে তার পরিবার বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং আতিককে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন বিএনপি ও বৈষম্য নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ডেমরা থানা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের একমাত্র দাবি—এই ভাইয়ে ভাইয়ে খেলা বন্ধ হোক এবং উদ্ধার করা হোক দখলকৃত শত শত বিঘা জমি ও সহায়-সম্পত্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *