স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর কদমতলী এলাকায় নিজ বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নাঈম (১৮) নামের এক কিশোর সিএনজি চালককে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার (৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় কদমতলীর স্মৃতিধারা ৮ নম্বর গলি সংলগ্ন রাহেলা মঞ্জিলের সামনে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত নাঈমের বাড়ি বরিশালের পটুয়াখালী জেলার সদর থানার জনকাঠি গ্রামে। তিনি স্মৃতিধারা ৬ নম্বর গলির ২৫৫ নম্বর বাড়িতে বাবা-মা ও ভাইয়ের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন। তার পিতার নাম জাহাঙ্গীর হাওলাদার।
নাঈমের মা নাজমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “সকাল ৯টায় আমি কাজ করতে যাওয়ার আগে আমার দুই ছেলে বাসায় ঘুমিয়ে ছিল। কিছুক্ষণ পর একজন ছেলে এসে বলে, ‘আন্টি, আপনার ছেলেকে মারতেছে’। দৌড়ে গিয়ে দেখি, রাস্তায় শুধু রক্ত পড়ে আছে। স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেছে।” তিনি অভিযোগ করেন, “আমার ছেলেকে বাঁচানো গেল না। হাসপাতাল থেকে এখনো কেউ এসে বলেনি যে সে মারা গেছে। কেউ খবরটাও দেয়নি ঠিকমতো।”
নাঈমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে গেলে ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান। মরদেহ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে।
স্মৃতিধারা এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাঈমকে ৮ নম্বর গলির পূর্ব প্রান্ত থেকে পশ্চিম দিকে টেনে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কুপিয়ে হত্যা করা হয়। তারা বলেন, “এলাকায় মাদকের অবাধ বিস্তার এবং কিশোর গ্যাংয়ের দাপট বেড়েই চলেছে। থানা পুলিশ আগের মতো সক্রিয় না থাকায় খুন, ছিনতাই, চুরি ও আত্মহত্যার মতো অপরাধ ব্যাপক হারে বেড়েছে।”
নিবাসীরা বাড়ির মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি প্রতিটি বাসার সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকতো, তাহলে অপরাধীরা এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস পেত না।”
এ বিষয়ে শ্যামপুর জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) শরাফত হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
এ ঘটনায় কদমতলী থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এলাকাবাসী দ্রুত বিচার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের দাবি জানিয়েছেন।