স্টাফ রিপোর্টার :
বর্তমানে নওগাঁ সরকারি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত প্রফেসর ডক্টর ডিএম ফিরোজ শাহ (আইডি ৮৩০৪, শিক্ষা ক্যাডার) একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিজের ক্ষমতা ও অর্থসম্পদের বিস্তার ঘটিয়েছেন বলে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, তিনি নিজেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটাতেন এবং সেই পরিচয়ের জোরেই একের পর এক পদোন্নতি ও প্রশাসনিক সুবিধা আদায় করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ পরিষদের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন সক্রিয় ছিলেন এবং সেই পৃষ্ঠপোষকতাই তাকে দেশে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক প্রভাব অর্জনে সহায়তা করেছে।
ডিএম ফিরোজ শাহ-এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে—ঘুষ নেওয়া ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের হয়রানি করা। কুমিল্লা টিচার্স ট্রেনিং কলেজে প্রিন্সিপাল থাকা অবস্থায় তিনি প্রশিক্ষণার্থীদের ‘পাশ করিয়ে দেওয়ার’ নামে টাকা আদায় করতেন। অভিযোগ রয়েছে, টাকা না দিলে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দিতেন এবং ফলাফল আটকে রাখতেন।
এছাড়াও, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে কেন্দ্র করে একাধিক বই রচনা করেছেন, যেগুলো হলো:
বঙ্গবন্ধু শিক্ষা দর্শন
অন্য চোখে বঙ্গবন্ধু
উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ ১০ রাজনীতিবিদ
উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন
সমালোচকদের মতে, এসব বই মূলত দলীয় আনুগত্য দেখানোর হাতিয়ার, যার মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক মহলে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন।
তবে এই বিষয়ে প্রফেসর ডক্টর ডিএম ফিরোজ শাহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বিষয়টিকে ‘ঐচ্ছিক মিথ্যাচার’ বলে দাবি করেন।
শিক্ষাঙ্গনে এমন রাজনৈতিক দালালি ও দুর্নীতি শিক্ষা ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে যদি একজন কর্মকর্তা ঘুষ, ভয়ভীতি ও প্রশাসনিক দুর্নীতিতে লিপ্ত হন, তাহলে গোটা সিস্টেমই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। সচেতন নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্টরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।