স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবাধিকারের দাবিতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাবে ভারত ভোটদানে বিরত থাকায় কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই অবস্থানকে ‘লজ্জাজনক ও হতাশাজনক’ আখ্যা দিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মানবতার বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। খবর ইকোনমিক টাইমস।
শনিবার (১৪ জুন) এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “এই সিদ্ধান্তের কোনো নৈতিক বা কূটনৈতিক ভিত্তি নেই। প্রকৃত আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের জন্য ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর সাহস দরকার।”
তিনি আরও বলেন, যখন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একটি গোটা জাতিকে ধ্বংস করছেন, তখন ভারত কেবল নীরব নয়, বরং ইসরাইলকে ইরানে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের মতো পদক্ষেপে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করছে। তার মতে, এটি একটি দেশের সার্বভৌমত্বের চরম লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক নীতিমালার সম্পূর্ণ বিরোধী।
প্রিয়াঙ্কা আরও বলেন, “গাজায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। পুরো একটি জনগোষ্ঠীকে অবরুদ্ধ করে অনাহারে মারা হচ্ছে, অথচ আমরা কোনো অবস্থান নিচ্ছি না—এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি ভারতের বর্তমান অবস্থানকে দেশটির বিরোধী উপনিবেশবাদী ঐতিহ্য থেকে এক করুণ পশ্চাদপসরণ বলে উল্লেখ করে প্রশ্ন তোলেন, “কীভাবে আমরা আমাদের সংবিধানের নীতিমালা ও স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল্যবোধ বিসর্জন দিতে পারি, যেগুলো শান্তি ও মানবতার ভিত্তিতে আমাদের আন্তর্জাতিক অবস্থান তৈরি করেছিল?”
প্রিয়াঙ্কার মতে, অতীতে ভারত বারবার ন্যায়ের পক্ষে সাহসিকতা দেখিয়েছে। আজকের বিভক্ত বিশ্বে ভারতের উচিত মানবতার পক্ষে এবং অহিংসার নীতিতে নির্ভয়ে দাঁড়ানো।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গাজায় অবিলম্বে ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতির পক্ষে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এতে ১৪৯টি দেশ ভোট দেয় পক্ষে, ১২টি দেশ বিপক্ষে, আর ভারতসহ ১৯টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে।
প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এর আগেও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। গত বছর সংসদ অধিবেশনে তাকে দেখা যায় একটি ব্যাগ বহন করতে, যাতে লেখা ছিল “Palestine” এবং ছিল তরমুজের প্রতীক—ফিলিস্তিন সংহতির বৈশ্বিক প্রতীক।