আওয়ামী লীগের দোসর শাহীনের ক্যাশিয়ার কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবিস লতিফুর রহমান ও রেজিস্টার ইমরুল খোরশেদ লুটেপুটে খাচ্ছে কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিস

স্টাফ রিপোর্টার:

গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ ইং, দেশের স্বৈরাচার পতন হয়। ক্ষমতায় এসেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন করে উপদেষ্টা কমিটি সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন নতুন এক বাংলাদেশ। তাই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুস যোগ্যতা অনুযায়ী সব দপ্তরে বসিয়েছেন যোগ্য ব্যক্তিদের। তেমনি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে ড. আসিফ নজরুলকে দায়িত্ব প্রদান করেন।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক দপ্তরের সাথে জড়িয়ে আছে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, যেখানে প্রতিনিয়ত হচ্ছে জমি বেচাকেনা। তাই বাংলাদেশের ১ম সারির ঘুষের স্বর্গরাজ্য যদি কিছুকে বলা হয়, তা হলো ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।

উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পরে প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, “আমাদের দেশে পরিস্থিতি ভাল করতে হলে আগে বন্ধ করতে হবে ঘুষ বানিজ্য। তার সাথে ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোকে জন হয়রানি থেকে শুরু করে দুর্নীতি ও ঘুষ বানিজ্য বন্ধ করতে হবে, যাতে সাধারণ জনগণ এ সকল অফিসে কোনো প্রকার ভুক্তভোগী না হয়।”

কিন্তু কথায় আছে—কে শুনে কার কথা! কেরানীগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের নকল নবিস লতিফুর রহমান ও সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদ কাউকে কোনো প্রকার তোয়াক্কা না করে দেদারসে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ কেরানীগঞ্জ উপজেলায় রাজত্ব করেছেন আওয়ামী লীগের দোসর উপজেলা চেয়ারম্যান, ভূমিদস্যু শাহীন। কথায় আছে, ভূমিদস্যু শাহীনের ইশারা ছাড়া কেরানীগঞ্জ উপজেলায় পাখিও উড়তে পারত না। ভূমিদস্যু শাহীন নিয়ন্ত্রণ করতো উপজেলার সমস্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। এর মধ্যে অন্যতম এসিল্যান্ড ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস।

ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রারদের মাধ্যমে নামে-বেনামে হাতিয়ে নিয়েছেন কেরানীগঞ্জ উপজেলার সহজ-সরল মানুষদের সহায় সম্পত্তি। আওয়ামী লীগের দোসর শাহীনের ক্যাশিয়ার খ্যাত নকল নবিস লতিফুর রহমান, শাহীনের নাম ভাঙিয়ে কামিয়েছেন কোটি কোটি টাকা, যা দিয়ে কেরানীগঞ্জ ও ঢাকায় গড়েছেন জমি ও ফ্ল্যাট।

সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদের সমস্ত অবৈধ ও ঘুষ বানিজ্য চলে এই লতিফুর রহমানের মাধ্যমে। কেরানীগঞ্জ উপজেলার নারায়ণপট্টি গ্রামের মো. মফিজুর রহমানের ছেলে এই নকল নবিস লতিফুর রহমান একজন আওয়ামী লীগের দোসর ও ভূমিদস্যু শাহীন চেয়ারম্যানের ক্যাশিয়ার। দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ রাজত্ব করে চলেছেন কেরানীগঞ্জে।

ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও ভূমিদস্যু পালিয়ে গেলেও এখনো বহাল তবিয়তে চাকরি করছেন তারই ইশারায় নিয়োগকৃত সাব-রেজিস্ট্রার ইমরুল খোরশেদ ও নকল নবিস লতিফুর রহমান। বর্তমানে চতুর লতিফুর রহমান বিএনপি নেতাদের সাথে হাত মিলিয়ে বিএনপি নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন। সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সমস্ত অবৈধ কর্মকাণ্ডের সাঙ্গপাঙ্গ এই লতিফুর রহমান।

লতিফুর রহমান গর্ব করে বলেন, “আমার কাছে শত শত সাংবাদিক আসে, কাউকে ৫০০, কাউকে ১০০০, আর বড় সাংবাদিক হলে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দেই। আর কিছু সাংবাদিক আছে, তাদের ২০০ টাকা দিলেই হয়। শুধু সাংবাদিক নয়, প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে এবং রাজনীতিবিদদেরও দেই।”

এই যে টাকা গুলো দেন, তা কোথায় পান—জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “কাজ করতে গেলে ভালো মন্দ সব মিলিয়েই করতে হয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *