গাজায় যুদ্ধবিরতির পক্ষে মুখ খুললেন ইসরাইলি বিরোধী নেতা

স্বাধীন আন্তর্জাতিক ডেস্ক: 

মধ্যপ্রাচ্যের দীর্ঘদিনের চির বৈরী দুই দেশ, ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে চলমান ১২ দিনের সংঘাত অবসানের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘোষণার পর উভয় দেশ এ যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকালে ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরপরই গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ইসরাইলের বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ার লাপিদ। এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক বার্তায় তিনি লিখেছেন, “এখন বাকি শুধু গাজা। সেখানেও যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে। জিম্মিদের ফিরিয়ে দাও, যুদ্ধ বন্ধ করো!”

অন্যদিকে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলা ও নির্বিচারে গুলিবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। সোমবার (২৩ জুন) ভোর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন ছিলেন ত্রাণপ্রার্থী। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল-সমর্থিত বিতর্কিত ত্রাণ সংস্থা গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে গিয়ে প্রাণ হারান।

আল-জাজিরা ও গাজার মেডিকেল সূত্র জানায়, চলমান আগ্রাসনে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত মোট ফিলিস্তিনি নিহতের সংখ্যা ৫৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শুধু জিএইচএফ পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে চালানো হামলায় ৪০০’র বেশি ত্রাণপ্রার্থী নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় ১,০০০ জন।

জাতিসংঘ এ ধরনের সহায়তা সংস্থাকে “রাজনৈতিক হাতিয়ার” হিসেবে ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

গাজা সিটি থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, “ইসরাইল একদিকে ইরানের সঙ্গে সামরিক উত্তেজনায় জড়িত, অন্যদিকে গাজার অভ্যন্তরে তাঁবু ও আবাসিক স্থানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “রাফা ও নেটজারিম করিডোর এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ক্ষুধার্ত জনতা জড়ো হলেও ইসরাইলি সেনারা নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন ত্রাণপ্রার্থী রয়েছেন।”

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান-ইসরাইল যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ আরও বাড়বে, যদিও বাস্তব পরিস্থিতিতে এখনো শান্তির কোনো স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *