স্বাধীন সংবাদ ডেস্ক:
জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন জানিয়েছে, ২০০৯ সালের পিলখানায় সংঘটিত বিডিআর হত্যাকাণ্ড ছিল দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পিত একটি ষড়যন্ত্র, যেখানে তৎকালীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিভিন্ন মাত্রায় সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারেনি এবং চরম অবহেলা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
বুধবার (২৫ জুন) ধানমন্ডিতে অবস্থিত বাংলাদেশ রেফারেন্স ইনস্টিটিউট ফর কেমিক্যাল মেজারমেন্টস (বিআরআইসিএম)-এ এই হত্যা মামলা সংক্রান্ত তৃতীয় সংবাদ সম্মেলনে কমিশনের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) এ এল এম ফজলুর রহমান এ তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে সমস্যা সমাধানের নামে অপ্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে বিদ্রোহীরা নির্বিঘ্নে এই ভয়াবহ ঘটনার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে পেরেছে।
২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় আটকে থাকা কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা বারবার সাহায্যের জন্য আকুতি জানালেও প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে রাজনৈতিক নেতাদের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। সমস্যা সমাধানে সময় নষ্ট করার ফলে ঘটনাটি বড় আকার ধারণ করে।
তদন্তে এখন পর্যন্ত ১৫৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, যার মধ্যে শহীদ পরিবার, বেঁচে ফেরা কর্মকর্তা, সাবেক রাজনৈতিক নেতারা, বিভিন্ন সামরিক ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্য এবং সাংবাদিকরা রয়েছেন। আটজন রাজনৈতিক নেতার সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কারাগারে রয়েছে আবার কেউ বিদেশে পলাতক। এছাড়াও ৩৩ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিশন আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছে। বিভিন্ন দেশের দূতাবাস এবং জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে এবং সিসিটিভি ফুটেজের বিশ্লেষণ চলছে।
তদন্তের পরিধি ও জটিলতা বিবেচনায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত এই তদন্তের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে।
কমিশন আশা করছে, দীর্ঘমেয়াদি এই তদন্ত থেকে সকল সত্য উদঘাটিত হবে এবং সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।